Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

অবশেষ কলকাতা আসছেন জান্নাতুন

কোমরের তলা থেকে সাড় নেই। কথাও অসংলগ্ন। হাত দিয়েও কোনও কাজ করতে পারে না। বিছানায় পাশ ফিরতে পারে না। এ বার জান্নাতুনকে আনা হচ্ছে এসএসকেএমে।

এনজেপি স্টেশনে মায়ের সঙ্গে জান্নাতুন। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

এনজেপি স্টেশনে মায়ের সঙ্গে জান্নাতুন। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সুনন্দ ঘোষ ও সৌমিত্র কুণ্ডু
কলকাতা ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

স্কুলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে আড়াই বছর আগে আলিপুরদুয়ারের রাঙালিবাজনার জান্নাতুন ফিরদৌসির অসুস্থতা ধরা পড়ে। তাঁকে নিয়ে আসা হয় শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে। হৃদপিণ্ডে অস্ত্রোপচার করা হয়। তারপর থেকে সেই নার্সিংহোমেই কেটেছে দিনের পর দিন। কোমরের তলা থেকে সাড় নেই। কথাও অসংলগ্ন। হাত দিয়েও কোনও কাজ করতে পারে না। বিছানায় পাশ ফিরতে পারে না। এ বার জান্নাতুনকে আনা হচ্ছে এসএসকেএমে।

বৃহস্পতিবার এনজেপি থেকে পদাতিকে উঠেছে সে। শুক্রবার সে ভর্তি হবে এসএসকেএমে। বসবে মেডিক্যাল বোর্ডও। আর তাতে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন রাঙালিবাজনার আমজাদ আলি। ২০১৫ সালে স্কুলের স্বাস্থ্য শিবিরে জান্নাতুনের অসুস্থতা ধরা পড়ে। তবে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সরকারি শিশুসাথী প্রকল্পে সে বছরই জান্নাতুনের হৃদপিণ্ডে অস্ত্রোপচার হয়ে যায়। তখন থেকেই গ্রাম ছেড়ে, ভিটে ছেড়ে, কাজ ছেড়ে শিলিগুড়িতে মেয়ের কাছে পড়ে থেকেছেন আমজাদ। ভিটে বাড়ি বন্ধক দিয়ে, ধারদেনা করে সংসার চলছে।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে মেয়ের শরীর খারাপ হয়েছে।’’ চিকিৎসক জাভেদ সিদ্দিকি বলেন, ‘‘আমি হৃদপিণ্ডের অস্ত্রোপচার করেছিলাম। তা ঠিক হয়েছে। বাকি সমস্যা বলতে পারব না।’’ নার্সিংহোমের কর্ণধার ওয়াই এস চ্যাংয়ের আবার দাবি, ‘‘অস্ত্রোপচারের পর কিছু জটিলতা হয়। ধীরে ধীরে ভালও হচ্ছিল।’’

নার্সিংহোমে টাকা দিতে হচ্ছিল না। কিন্তু কত দিন মেয়েকে এ ভাবে ফেলে রাখবেন। নানা জায়গায় দরবার করেও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত লিগাল এড ফোরামের সাহায্যে হাইকোর্টের কানে কথা ওঠে। হাইকোর্টের কথাতেই এ বার ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু আরও আগে হল না কেন? জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, ‘‘মেয়েটির বাবা-মাকে কলকাতায় যাওয়ার কথা বোঝাতেই দেরি হয়েছে।’’ সে কথা মানতে পারছেন না আমজাদ।

তবে কলকাতা আসার প্রথম পদক্ষেপেই সাহায্য পেয়েছেন জান্নাতুন। ট্রেনে লোয়ার বার্থ না পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল। এক সহযাত্রী পরে তাকে নীচের বার্থ ছেড়ে দেন।

এ বার তিনি তাকিয়ে এসএসকেএমের দিকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy