শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে সরকারি পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা বিধানসভা থেকে প্রথম বারের জন্য বিধায়ক হন তিনি। তারপরেই রাজ্য প্রশাসনের তরফে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বোর্ড অফ ডিরেক্টরসদের মধ্যে শামিল করা হয়। গ্রেফতারের এত দিন পর তাঁকে সেই পদ থেকে সরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ঘটনাচক্রে, জেলবন্দি বিধায়ক যে এই সরকারি পদে রয়ে গিয়েছেন তা সে ভাবে নজরে পড়েনি রাজ্য প্রশাসনের কোনও কর্তার। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি পরিবহণ ভবনের এক কর্তার নজরে আসে বিষয়টি। তা জানানো হয় দফতরের অন্য শীর্ষকর্তাদের। নিজেদের মধ্যে বিষয়টি আলোচনার পর, সম্প্রতি পরিবহণ মন্ত্রীকে সে কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পরিবহণ ভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সব ঠিকঠাক চললে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিবহণ নিগমের ডিরেক্টর পর থেকে সরানো হতে পারে জীবনকৃষ্ণকে। কারণ প্রসঙ্গে পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেছেন, “রাজ্য সরকার চায় না সরকারি পদে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তিকে রাখা হোক। তাই দেরিতে হলেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বন এবং শিল্প পুনর্গঠন দফতর থেকে সরানো হয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রেও জীবনকৃষ্ণ সাহাকে সরানোর সিদ্ধান্ত মোটামুটি পাকা। শীর্ষমহল থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেলেই তা কার্যকর করা হবে।” শুধু জ্যোতিপ্রিয়ই নয়, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৎকালীন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতার করার মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি, মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই পরিবহণ দফতরের কর্তারা মনে করছেন জীবনকৃষ্ণকে পরিবহণ নিগমের পদ থেকে সরাতে খুব বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না তাঁদের।
আরও পড়ুন:
নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই থেকে জেলেই রয়েছেন তিনি। দলগত ভাবে এখন তিনি আর কোনও পদে নেই। এ বার সরকারি পদ থেকে তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। সিবিআই-এর তল্লাশির সময় তথ্য লোপাটের জন্য নিজের মোবাইল পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় হয়েছিল। সেই বিধায়ককে সরকারি পদে রেখে দিয়ে আর কোনও বিতর্ক চাইছে না নবান্ন।