রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তিনি যখন জেলে পা রেখেছিলেন, তখন তাঁর ওজন ছিল ১১০ কিলোগ্রাম। গা-হাত-পা বেশ ফোলাফোলা। তাই বিস্তর চেষ্টা করেও রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আঙুল থেকে আংটি খোলা যায়নি।
জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘ কয়েক মাসের জেল-জীবনে তাঁর ওজন ঝরেছে প্রায় ১০ কিলোগ্রাম। আর তাতেই আঙুলের ফোলা ভাব কমেছে। তখনই টানাটানি করতে খুলে এসেছে সেই আংটি। ১৪ জুন রাজ্য কারা দফতরের এডিজি সঞ্জয় সিংহ আদালতকে এমন রিপোর্টই পাঠিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই ও ইডির মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ। নিয়ম অনুযায়ী, জেলে কোনও বন্দিই কোনও ধরনের গয়না পরে থাকতে পারেন না। গত ১৯ এপ্রিল পার্থর জামিনের আবেদনের ভার্চুয়াল শুনানির সময়ে কলকাতার বিচার ভবনের সিবিআই আদালতে আইনজীবীরা আচমকা বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, "পার্থ অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই তাঁর হাতে তিনটি সোনার আংটি রয়েছে। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।” বিচারক তা নিয়ে পার্থকে প্রশ্নও করেন। প্রথমে পার্থকে বলতে শোনা যায়, ধর্মীয় কারণে তিনি আংটি পরেছেন। পরে বিচারক আইনের প্রশ্ন তুললে শুনানি চলাকালীনই পার্থ নিজেই পটাপট হাতের আংটিগুলি খুলে ফেলেন।
এই আংটি কাণ্ড নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। ইডির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপারকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। তখন আদালতে পৌঁছে জেল সুপারও একই যুক্তি দিয়ে জানিয়েছিলেন, পার্থর হাতের আঙুলগুলি অসম্ভব ফুলে থাকায় আংটি খোলা যায়নি। কিন্তু, সে দিন বিচারক জেল সুপারের যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি। শুনানি চলাকালীন পার্থ কী ভাবে নিজেই আংটি খুলে ফেলেছিলেন, পাল্টা সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারক। তার যথাযথ ব্যাখ্যা না পেয়ে জেল সুপারকে কার্যত ভর্ৎসনা করেন তিনি। এরপরেই এডিজি (কারা)-র কাছ থেকে আংটি কাণ্ডের রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারক। ১৯ জুনের মধ্যে আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল।
কারা দফতর সূত্রের খবর, ৯ জুন এডিজি (কারা) সঞ্জয় সিংহ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে জেল সুপার ও মেডিক্যাল অফিসার-সহ ৬ জন আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন। এডিজি নিজে সরাসরি পার্থকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কারা দফতর সূত্রের খবর, তাঁদের লিখিত বয়ান নথিবদ্ধও করা হয়। তারপরেই আদালতে চিঠি পাঠানো হয়।
ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালের ৫ অগস্ট পার্থ প্রেসিডেন্সি জেলে এলে জেলের আধিকারিক ও মেডিক্যাল অফিসারেরা নানা চেষ্টা করেও তাঁর আংটি খুলতে পারেননি। আংটি খোলার চেষ্টা করলেই যন্ত্রণায় চিৎকার-চেঁচামেচি করেছিলেন পার্থ। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ১৯ এপ্রিল শুনানি চলাকালীনও যে আচমকা নিজে জোর করে পার্থ আংটি খুলে ফেলেছিলেন, তার জন্য তাঁর আঙুলের চামড়া উঠে গিয়েছিল। সেই কারণে জেল হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাও করাতে হয়েছিল। তবে, গত ১১ মাসে তাঁর ওজন ১০ কেজি ওজন কমে যাওয়ায় আঙুলের ফোলা ভাব কিছুটা কমেছে। তাই, পার্থ নিজে আঙুল থেকে আংটি খুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ৯ জুন এডিজি-র উপস্থিতিতে পার্থর ওজনও মাপা হয়।
আজ, সোমবার এডিজি-র দেওয়া চিঠির ভিত্তিতে শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রের খবর। এ দিন পার্থর জামিনের মামলার ভার্চুয়াল শুনানিও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy