Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

উপাচার্যের পাশে ধনখড়

বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় থেকে রাজ্যপালের সচিব— সকলেই পুলিশ ডাকতে বলেছিলেন। কিন্তু উপাচার্য রাজি হননি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা পুলিশ ছাড়াই সমাধান করা যায় বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ জন্যই তিনি পুলিশ ডাকতে চাননি বলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে জানালেন যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। শনিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি উপাচার্যকে দেখতে গিয়েছিলেন আচার্য-রাজ্যপাল।

বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় থেকে রাজ্যপালের সচিব— সকলেই পুলিশ ডাকতে বলেছিলেন। কিন্তু উপাচার্য রাজি হননি। উপাচার্যকে ফোন করে রাজ্যপালও পুলিশ ডাকার কথা বলেছিলেন। উপাচার্য তখনও জানিয়ে দেন, তিনি পুলিশ ডাকবেন না। এর পর বাবুলকে ‘উদ্ধার’ করতে রাজ্যপাল নিজেই ক্যাম্পাসে যান। সঙ্গে ক্যাম্পাসে ঢোকে পুলিশও।

এ দিন সকালে উপাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, উপাচার্যের কেবিনে তখন উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক আর কে দত্ত রায়। তাঁর কাছে উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যের শারীরিক অবস্থার খবর নেন ধনখড়। এর পরে প্রায় ১০ মিনিট একান্তে আচার্য এবং উপাচার্যের মধ্যে কথা হয়। ওই সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নোট প্যাড চেয়ে নেওয়া হয় বলে সূত্রের দাবি। উপাচার্যের ফোন নম্বরটি চেয়ে লিখে নেন রাজ্যপাল।

পরে রাজভবন থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যপাল খুবই সন্তুষ্ট। উপাচার্য তাঁকে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে আচার্যের সাহায্য চান। আচার্যও তাঁকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে তিনি পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী। উপাচার্য তাঁকে জানান, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বৈঠকের ব্যবস্থা তিনি করবেন। সূত্রের দাবি, রাজ্যপাল উপাচার্যকে জানিয়েছেন, কোন পরিস্থিতিতে তাঁকে সে দিন ছুটে যেতে হয়েছিল। সুরঞ্জনবাবুর মতো বিদগ্ধ শিক্ষাবিদের প্রতি যে তাঁর সম্মান রয়েছে, সে কথাও বলেছেন।

উপাচার্যও রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনায় সন্তুষ্ট। তিনি পরে বলেন, ‘‘খুবই ভাল পরিবেশে কথা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আচার্যের সঙ্গে আশ্বাসমূলক আলোচনা হয়েছে। পুলিশ ছাড়াই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান হয়, তা আচার্যকে জানিয়েছি।’’
উপাচার্য তাঁকে এ-ও বলেছেন যে, বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের গাড়ি পড়ুয়ারা আটকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে সেই অবরোধ সরান। পুলিশের ভূমিকা সেখানে ছিল না।

এর পর বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় হাসপাতালে যান। শিক্ষামন্ত্রীর হাত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফুল পাঠিয়েছিলেন। যাদবপুরের পাশে যে রাজ্য সরকার রয়েছে তা উপাচার্যকে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তবে রাজ্যপালের উপাচার্যকে দেখতে আসা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘অনেকে হয়তো নিজের ভূমিকা বুঝতে পেরেছেন। এখন সেই ভূমিকা বদলাচ্ছেন। রাজ্যপালের পর পর তিনদিনের বিবৃতি দেখুন। পড়লে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।’’ উপাচার্য জানান, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বিকেলে উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্য দু’জনকেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy