Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

যাদবপুরে ‘রাম কে নাম’, গোঁ ছাড়েনি প্রেসিডেন্সি 

প্রেসিডেন্সির উদ্যোক্তা পড়ুয়ারা জানান, তাঁরা যে-করেই হোক, ছবিটি দেখাবেন। এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকেও তাঁরা এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে এসেছেন।

আনন্দ পটবর্ধনের ‘রাম কে নাম’

আনন্দ পটবর্ধনের ‘রাম কে নাম’

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৮
Share: Save:

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দ পটবর্ধনের ‘রাম কে নাম’ তথ্যচিত্র দেখাতে না-দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও ওই ছবির প্রদর্শন নিয়ে সোমবার আপত্তি উঠেছিল। সেখানকার কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা গ্রাহ্য করেননি। যাদবপুরে এ দিন তথ্যচিত্রটি দেখানো হয়।

প্রেসিডেন্সির উদ্যোক্তা পড়ুয়ারা জানান, তাঁরা যে-করেই হোক, ছবিটি দেখাবেন। এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকেও তাঁরা এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে এসেছেন।

হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি তথ্যচিত্রটি দেখাতে গেলে তা বন্ধ করে দিয়ে কয়েক জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তারই প্রতিবাদে প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ ছবিটি দেখাতে উদ্যোগী হয়েছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্সির ডিন অব স্টুডেন্স অরুণ মাইতি এ দিনও জানান, পড়ুয়ারা ছবি প্রদর্শনীর জন্য অনুমতি নেননি। বিকাশ ভবনে অরুণবাবু বলেন, ‘‘ওরা ছবি দেখানোর অনুমতিই নেয়নি। তাই তা বাতিল করার প্রশ্ন নেই।’’ অন্যতম উদ্যোক্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র কল্পক গুহ জানান, তাঁরা লিখিত ভাবে ডিন অব স্টুডেন্টসের দফতরে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আবেদনপত্র গ্রহণের পরে কর্তৃপক্ষ প্রাপ্তিস্বীকারের যে-চিরকুট দেন, সেটি তাঁরা সংগ্রহ করেননি।

কল্পকের বক্তব্য, ডিন অব স্টুডেন্টস শুক্রবার তাঁকে ফোন করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় এই তথ্যচিত্র দেখানোর অনুমতি দেবে না। এ দিন কল্পক জানান, তাঁরা আবেদন করার সময় ছবির নাম লেখেননি। ডিন অব স্টুডেন্টস তাঁকে ফোন করে প্রশ্ন করেন, ‘রাম কে নাম’ যে দেখানো হচ্ছে, সেটা তাঁকে জানানো হয়নি কেন। এখন কোনও ছবি দেখানো যাবে না। পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, কোনও মহলের প্রবল চাপেই ক্যাম্পাসে এই তথ্যচিত্র দেখাতে দেওয়া হচ্ছে না। কল্পক বলেন, ‘‘এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্সির প্রগতিশীলতার ইতিহাসের সঙ্গে খাপ খায় না। আমরা ছবিটি দেখাবই।’’

প্রেসিডেন্সির যে-সব পড়ুয়া এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন দেবনীল পাল। তিনি জানান, প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ যে ‘রাম কে নাম’ দেখাতে দিচ্ছেন না, সেটা শিক্ষামন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এ কথাও বলা হয়েছে যে, প্রয়োজনে ক্যাম্পাসের ঠিক বাইরে তাঁরা ছবিটি দেখানোর ব্যবস্থা করবেন। বক্তব্য জানতে এ দিনও উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।

যাদবপুরে তথ্যচিত্রটি না-দেখানোর ব্যাপারে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর কাছে লিখিত ভাবে আপত্তি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজেপি প্রভাবিত কর্মচারী পরিষদের তিন সদস্য। রেজিস্ট্রার জানান, মৌখিক ভাবে আপত্তি জানান এবিভিপি-সমর্থক কিছু পড়ুয়াও। তাঁদের বক্তব্য, হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যচিত্রটি দেখাতে দেওয়া হয়নি। এখানেও তার প্রদর্শন বন্ধ করা হোক। রেজিস্ট্রার জানান, ফিল্ম স্টাডিজ়ের পড়ুয়ারা বিভাগীয় প্রধানের সম্মতি নিয়েই ক্যাম্পাসে ওই তথ্যচিত্র দেখানোর জন্য তাঁর কাছে আবেদন করেন। তা মঞ্জুর করা হয়েছে। এখন অনুমতি বাতিল করা হবে না। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন নিয়ে কথা বলেছি। উনি জানান, এই তথ্যচিত্রটি ফিল্ম স্টাডিজ় বিভাগের পাঠ্যক্রমেই রয়েছে। তাই এর প্রদর্শন বন্ধের কোনও প্রশ্নই আসে না।’’

সন্ধ্যায় ছবিটি দেখানো হয়। কর্মচারী পরিষদ এবং এবিভিপি সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষের দফতরে বিক্ষোভ দেখায়। সেখানে ছিলেন রেজিস্ট্রারও। কিছু পরে ছবিটি দেখানোর অনুমতিপত্রের প্রতিলিপি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা চলে যান।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE