সেন্ট্রাল ভিস্তা নিয়ে মোদীকে আকহাত সুখেন্দুশেখরের। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
কোভিডে বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতি। সরকারের হাতে তেমন টাকা নেই। তাই কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। শনিবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তকেই এ বার তুলোধনা করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, সেন্ট্রাল ভিস্তা গড়তে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে কেন্দ্রের। প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিদেশ থেকে বিলাসবহুল বিমানও আসতে বাধা নেই। শুধু সাধারণ মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার টাকাই নেই সরকারের। তৃণমূলের দাবি, এ সব আসলে ভাঁওতা। মোদী সরকার সাধারণ মানুষের জন্য বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। শুধুমাত্র কর্পোরেটদের পকেট ভারী করাই তাদের লক্ষ্য।
সোমবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেন আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি-র সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। সদ্য জোড়াফুলে ফেরা মুকুল রায়, রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং রাজ্যসভায় তৃণমূলের উপ দলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তাঁকে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানেই কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করায় মোদী সরকারকে একহাত নেন সুখেন্দুশেখর। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, তারা কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না। বলছে হাতে টাকা নেই। অথচ সেন্ট্রাল ভিস্তার জন্য ২০ হাজার কোটি খরচে অসুবিধা হচ্ছে না। সেখানে টাকা আছে।’’
অতিমারি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রীর ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলের টাকা কোথায় যাচ্ছে, তা নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। ক্ষতিপূরণের প্রশ্নেও সোমবার সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকেই নিশানা করেন সুখেন্দুশেখর। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিলাবহুল বিমান আনতে টাকার সমস্যা হচ্ছে না। নতুন সংসদভবন গড়ার কোনও প্রয়োজনই ছিল না। সংস্কার করে নিয়ে কাজ চালানো যেত। ব্রিটেনে তো তিন-তিন বার আগুন লেগে সংসদ ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও নতুন সংসদ ভবন গড়েনি তারা। সংস্কার করে সেখানেই কাজ চলছে। জাপান, আমেরিকাতেও একই ঘটনা ঘটেছে। অথচ এখানে তার উল্টোটা ঘটছে।’’
অতিমারি পরিস্থিতিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ যেখানে কাজ হারিয়েছেন, দু’বেলা খাবার জোগাড় করতেই যেখানে হিমশিম খেতে হচ্ছে, প্রিয়জনকে হারিয়ে হাজার হাজার পরিবার যখন পথে বসেছে, সেই সময় অকারণে এ ভাবে টাকা নষ্ট করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সুখেন্দুশেখর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে কোটি কোটি টাকা দরকার, যাতে সাধারণ মানুষের হাতে নগদ তুলে দেওয়া যায়, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। সেই সময় বিমান কেনা, সেন্ট্রাল ভিস্তা গড়া, কতটা যুক্তিযুক্ত? ২০ হাজার কোটি টাকায় সেন্ট্রাল ভিস্তা হচ্ছে। কোথায় গিয়ে শেষ হবে জানা নেই। বেমালুম কর্পোরেটদের ঋণ মকুব করে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্কের কাছে ২০ হাজার ২৫ কোটি টাকা ঋণ যাঁদের, ২-৩ হাজার টাকায় মিটমাট করে বাকিটা মকুব করে দেওয়া হচ্ছে। কর্পোরেটদের পকেট ভারী করাই মোদী সরকারের লক্ষ্য। এরা দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে।’’
কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। কিন্তু শনিবার হলফনামা জমা করে কেন্দ্র জানিয়েছে, এত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের। কেন্দ্রের এই যুক্তিতে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। শুরু থেকেই কোভিড পরিস্থিতিতে সেন্ট্রাল ভিস্তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একসুরে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy