Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

ধর্ষণ মামলায় রাজ্য কেন অভিযুক্তের হয়ে কথা বলছে? এ তো রাজ্যের লজ্জা, বললেন বিচারপতি

উলুবেড়িয়ার একটি ধর্ষণ মামলায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। তাঁর নির্দেশ, নির্যাতিতার পরিবারকে সশস্ত্র পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে। সব নথি হস্তান্তর করতে হবে সিআইডি-কে।

representational image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ০৭:২১
Share: Save:

“রাজ্য কেন অভিযুক্তের হয়ে কথা বলছে, সেটাই তো পরিষ্কার নয়। এটা রাজ্যের লজ্জা। এক জন নির্যাতিতার পাশে রাজ্যের থাকা উচিত। সেখানে রাজ্য পুলিশ থাকছে অভিযুক্তের পাশে। এটা চলতে পারে না।” বৃহস্পতিবার হাওড়ার উলুবেড়িয়ার একটি ধর্ষণ মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের।

এই কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। বৃহস্পতিবার তাঁর নির্দেশ, নির্যাতিতার পরিবারকে সশস্ত্র পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে। এখনই সব নথি হস্তান্তর করতে হবে সিআইডি-কে। উলুবেড়িয়া থানা আজ, শুক্রবারের মধ্যে যাবতীয় নথি সিআইডিকে হস্তান্তর না করলে আদালত পদক্ষেপ করবে।

প্রসঙ্গত, উলুবেড়িয়ায় সরকারি জায়গায় একটি ছোট চায়ের দোকান রয়েছে। দোকানের মালিক তথা মামলাকারীর অভিযোগ, স্থানীয় কিছু লোক দোকান বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তাঁদের চাপ দিচ্ছিল। তাঁর অভিযোগ, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর নাবালিকা মেয়েকে তারা ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং পরে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়।

মামলাকারীর দাবি, পুলিশ প্রথমে তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। পরে অভিযোগ নিয়ে পুলিশ তিন মামলাকারীর দাবি, পুলিশ প্রথমে তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। পরে অভিযোগ নিয়ে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর দাবি, এর মধ্যেই সামাজিক চাপে পড়ে তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। মামলাকারীর আইনজীবী রামেশ্বর সিংহের দাবি, অভিযুক্তেরা এর পরেও এলাকায় ঘুরছে এবং মূল অভিযুক্ত শেখ একরামুল তাঁদের হুমকি দিচ্ছে।

সরকারের তরফে জানানো হয়, যে জমিতে চায়ের দোকান, সেটি সরকার বিক্রি করে দিয়েছে। জমি বেআইনি ভাবে দখল করে ওই দোকান চলছে। বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘‘সরকার জায়গা বিক্রি করেছে, আমি মেনে নিলাম। কিন্তু তাতে কি মহিলাদের ধর্ষণ করার অধিকার জন্মে যায়? রাজ্য কী করে বলছে জমি বিক্রি করা হয়েছে? আদালত নির্যাতিতার নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে। এর বাইরে কোনও কিছু নিয়ে ভাবতে যাবে না কোর্ট।’’

আদালতে উপস্থিত পুলিশ অফিসারদের কাছে বিচারপতি জানতে চান, কত বার তল্লাশি হয়েছে? গ্রেফতারের জন্য কী কী চেষ্টা করেছে পুলিশ? কেস ডায়েরি দেখতে চান তিনি। বিচারপতি সেনগুপ্তের প্রশ্ন, ‘‘মূল অভিযুক্ত কি খুব প্রভাবশালী?’’

রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, মামলাকারী সরকারের জায়গায় থাকা দোকান বিক্রি করে দিয়েছেন। এই বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষ গণস্বাক্ষর করে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। উলুবেড়িয়া থানার আইসি রামেশ্বর ওঝা ও তদন্তকারী অফিসার এ দিন হাজির ছিলেন আদালতে। বিচারপতির তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েন আইসি। বিচারপতি আইসিকে বলেন, ‘‘আপনি ধর্ষণের ঘটনাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy