প্রতীকী চিত্র।
এত দিন পড়ুয়াদের ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ বা ‘বাড়ির কাজ’ দেওয়া হলেও তার মূল্যায়নের কোনও বিশেষ পদ্ধতি ছিল না। মূল্যায়ন কত জরুরি, অতিমারিতে পরীক্ষা বাতিলের পরে সেটা মালুম হচ্ছে বলে শিক্ষা শিবিরের অভিমত। এই অবস্থায় এ বার থেকে অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে নম্বর দিয়ে নয়, সেই মূল্যায়ন হবে ‘গ্রেডেশন’ পদ্ধতিতে। আগামী বছরেও যদি অতিমারির জেরে পরীক্ষা বাতিল করতে হয়, তখন এই গ্রেডেশনের ভিত্তিতেই মূল্যায়ন হবে ছাত্রছাত্রীদের।
“অবিলম্বে অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মূল্যায়ন শুরু করে দেওয়া যে দরকার, সেটা বুঝেই এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছিল। ঠিক হয়েছে, প্রতি মাসের অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মূল্যায়ন হবে গ্রেডেশনের মাধ্যমে,” বলেন রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। তাঁর ব্যাখ্যা, এখন আধুনিক পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সময় নম্বর নয়, গ্রেড দেওয়া হচ্ছে। তাই অ্যাক্টিভিটি টাস্কের ক্ষেত্রেও গ্রেডেশন পদ্ধতি চালু হচ্ছে।
প্রতি মাসে মিড-ডে মিলের সঙ্গে অ্যাক্টিভিট টাস্ক দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। বাংলা শিক্ষা পোর্টাল থেকে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক ডাউনলোড করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তা দিচ্ছেন অভিভাবকদের। মিড-ডে মিলের সামগ্রী নেওয়ার দিন স্কুলে গিয়ে অভিভাবকেরা অ্যাক্টিভিটি টাস্কও সংগ্রহ করে নিয়ে যান। বাড়িতে বসে ছাত্রছাত্রীরা তার সমাধান করে। পরে সেই অ্যাক্টিভিটি টাস্ক আবার স্কুলে পৌঁছে দেন অভিভাবকেরাই।
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়া হয় না। তাঁদের অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়ার জন্য স্কুল একটি দিন নির্দিষ্ট করে দেয়। সে-দিন অভিভাবকেরা এসে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নিয়ে যান। এ বার অ্যাক্টিভিটি টাস্কেরও মূল্যায়ন করতে হবে বলে সম্প্রতি স্কুলপরিদর্শকেরা স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেন।
গত বছর করোনাকালে অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মূল্যায়ন না-হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়েছিলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বাতিল হওয়ার পরে যখন অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের মাধ্যমে তাঁদের ফল ঘোষণার পরিকল্পনা করা হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে, কিসের ভিত্তিতে সেই মূল্যায়ন হবে? সেই অর্থে গত বছর দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের কোনও মূল্যায়ন হয়নি। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আগে থেকেই যদি অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মূল্যায়নের বন্দোবস্ত থাকলে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন নিয়ে সমস্যা হত না।
অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্নের পাশে কোনও নম্বর না-থাকায় শিক্ষা শিবিরের প্রশ্ন উঠছে, তা হলে এই মূল্যায়ন কী ভাবে হবে? ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “কী পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হবে, তা নিয়ে অনেক শিক্ষকই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এই বিষয়ে শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা থাকলে আরও ভাল হয়। গ্রেডেশনের সঙ্গে অ্যাক্টিভিটি টাস্কের নম্বরও দেওয়া হোক। তা হলে পড়ুয়া জানতে পারবে, কোনও একটি বিষয়ে তার ঠিক কতটা দখল আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy