ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা কার্যত থাকে না। তবু এ বার মাধ্যমিকে ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার দিন ঝড় বৃষ্টিতে কিছু জেলায় পরীক্ষা কিছুক্ষণের জন্য বিঘ্নিত হয়েছে। পরীক্ষার হল অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় কিছু ক্ষণের জন্য পরীক্ষা স্থগিতও করা হয়। মাধ্যমিকের মধ্যে এই ঝড়বৃষ্টিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কারণ আগামী বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দু’টি সিমেস্টারে ভাগ হচ্ছে। প্রথম সিমেস্টার এ বছর সেপ্টেম্বরে হওয়ার কথা। সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে ঘোর বর্ষা থাকে। সঙ্গে কখনও কখনও থাকে ঘূর্ণিঝড়ও। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের চিন্তা, এই পরিস্থিতিতে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সিমেস্টার সূচি অনুযায়ী করা যাবে তো?
চলতি বছর ৩ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এ বারই শেষবারের মতো হচ্ছে প্রথাগত উচ্চ মাধ্যমিক। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, ৩ মার্চ থেকে যে উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হচ্ছে সেই পরীক্ষায় আবহাওয়া খারাপ হওয়ার বিষয় নিয়ে বিশেষ চিন্তা নেই। পরীক্ষা শুরু সকাল ১০টা থেকে। চলবে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। মার্চ মাসে সকালের দিকে ঝড় বৃষ্টির হওয়ার সম্ভাবনা কমই থাকে। মাধ্যমিকে এ বার যেটা হয়েছে সেটা ব্যতিক্রম। মাধ্যমিকের মতো কিছু সময়ের জন্য ঝড় বৃষ্টি হলে সামলে নেওয়া যাবে। চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘আমরা খুব উদ্বিগ্ন রয়েছি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে উচ্চ মাধ্যমিকের যে প্রথম সিমেস্টার হতে চলেছে, সেটা নিয়ে। কারণ গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখছি সেপ্টেম্বরে ঘোর বর্ষা চলে। বেশ কিছু জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়ে যায়। কিছু জেলায় বন্যার কারণে স্কুল ছুটিও দিতে হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক গোটা রাজ্য জুড়ে হয়। বেশি বৃষ্টি হলে সব জেলায় নির্ধারিত সূচিতে প্রথম সিমেস্টার পরীক্ষা করা সম্ভব হবে তো?’’ এ ক্ষেত্রে কী করণীয় সেই নিয়ে কয়েকবার সংসদ কর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে এখনও সমাধানের পথ মেলেনি।
সেপেম্বরে পরীক্ষা হলে বর্ষার কারণে বিঘ্ন ঘটতে পারে মনে করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরাও। তাঁদের একাংশের মতে, প্রথম সিমেস্টার পিছিয়ে অক্টোবর বা নভেম্বরে করা যেতে পারে। তাহলে আর বর্ষার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সিমেস্টার পড়বে না।
তবে অক্টোবরে আবার পুজোর ছুটি থাকায় সেই সময় স্কুলে প্রথম সিমেস্টার করা কতটা সম্ভব এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংসদ কর্তাদের মতে সেক্ষেত্রে শিক্ষা দফচরের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ অনুমতিতে স্কুল খুলিয়ে পরীক্ষা নেওয়া যায় কিনা দেখতে হবে। চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘নভেম্বরে প্রথম সিমেস্টার হলে সেক্ষেত্রে আবার অনেক দেরি হয়ে যাবে। তখন আবার দ্বিতীয় সিমেস্টারও মার্চের প্রথমে না করে পিছোতে হবে। সেটাও কতটা সম্ভব তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’ তবে মার্চের প্রথম দিকে দ্বিতীয় সিমেস্টারের সূচি না ফেলে মার্চের শেষের দিকে হলে এপ্রিলের প্রথমে পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে। তাহলে সময় মতো উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরিয়ে যাবে বলে মনে করছেন চিরঞ্জীব। চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘এই নিয়ে আমরা শিক্ষা দফতরের সঙ্গে খুব শীঘ্রই বৈঠকে বসব।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)