Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
বর্ধমান স্টেশনের দুর্ঘটনায় জমা পড়ল তদন্ত রিপোর্ট
Barddhaman

গাফিলতিতেই ভেঙেছে ভবন

রেল সূত্রের খবর, বর্ধমান স্টেশনের ওই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট শুক্রবার জমা পড়েছে হাওড়ার ডিভিশনের কর্তাদের কাছে।

ভেঙে পড়া ভবন নতুন ভাবে তৈরির কাজ চলছে। ছবি: উদিত সিংহ

ভেঙে পড়া ভবন নতুন ভাবে তৈরির কাজ চলছে। ছবি: উদিত সিংহ

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪১
Share: Save:

স্টেশনের ভবন ভেঙে পড়ার ঘটনা ঠিকাদারের গাফিলতির কারণেই, রিপোর্ট দিয়ে জানাল রেলের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। সেই সঙ্গে ভবনটি সংস্কারের জন্য ইঞ্জিনিয়ারেরা নকশাও তৈরি করে ফেলেছেন বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রাচীন ভবনটি যে রকম ছিল, সংস্কার করে সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানান।

রেল সূত্রের খবর, বর্ধমান স্টেশনের ওই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট শুক্রবার জমা পড়েছে হাওড়ার ডিভিশনের কর্তাদের কাছে। হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান বলেন, ‘‘এডিআরএমের কাছে ওই তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেখানে ঠিকাদারের গাফিলতির কথা বলা হয়েছে। এর পরে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ভেঙে পড়া ভবন সংস্কারের জন্য নকশা তৈরিতে রেলকে সাহায্য করেছে খড়্গপুরের আইআইটি এবং যাদবপুরের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভবনের ওই অংশ যেমন ছিল, ঠিক সেই অবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে।’’

৪ জানুয়ারি রাত ৮টা ৮ মিনিট নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশপথে ঝুলবারান্দার একাংশ ভেঙে পড়ে। তিন তলা ভবনের অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনের অংশও ধসে পড়ে। রেল সূত্রে জানা যায়, ১৯০৫ সালে তৈরি স্টেশন ভবনের মূল কাঠামো চুন-সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি। ছাদে লোহার কড়ি-বরগা। দুর্ঘটনার আগে সৌন্দর্যায়ন ও ভবন সংস্কারের জন্য সেখানে কাজ করছিল বরাতপ্রাপ্ত একটি ঠিকাদার সংস্থা। দুর্ঘটনায় ওই ভবনের আটটি স্তম্ভের মধ্যে দু’টি স্তম্ভ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়, যাঁর পরিচয় এখনও মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনার পরেই রেলের তরফে তিন জনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দশ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল কমিটির। কিন্তু তা জমা পড়ল প্রায় তিন সপ্তাহ পরে। রেল সূত্রে জানা যায়, রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাচীন স্তম্ভগুলির ভারী যন্ত্রের ‘ড্রিল’ সহ্য করার ক্ষমতা আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়েছিল, এমন তথ্য তদন্ত কমিটি পায়নি। কাঠামো-বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, সহনক্ষমতা যাচাই না করে কাজ করায় চুন-সুরকির মশলা দেওয়া ইটের স্তর নড়ে যায়। তখন উপরের চাপে স্তম্ভ বা কাঠামো ভেঙে পড়ে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যে দায়িত্ববোধ নিয়ে শতাব্দী প্রাচীন ওই ভবনের স্তম্ভে কাজ করা দরকার ছিল, তা করা হয়নি।

রেল সূত্রে জানা যায়, ওই ভবনের বিপজ্জনক অংশ কয়েক দিন আগে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঝুলবারান্দায় বাকি স্তম্ভগুলিও ভাঙা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা ভেঙে যাওয়া ভবনের মূল প্রবেশদ্বারটি একই রকম রেখে নকশা করে আইআইটি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারেরা সেই নকশা অনুমোদন করেছেন বলে রেলকর্তাদের দাবি।

এ দিন বর্ধমান স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভাবে ভবনের অংশ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারেরা তদারক করছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘যাত্রীদের কথা ভেবে দ্রুত কাজ শেষ করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। দেড়-দু’মাসের মধ্যে বর্ধমান স্টেশন আবার ঝুলবারান্দা ফিরে পাবে বলে আশা করছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Barddhaman Barddhaman Station Building Collapse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE