প্রতীকী চিত্র
বদলির নির্দেশকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা সিবিআই অধিকর্তাকেই চিঠি দিলেন নারদ তদন্তের তদন্তকারী আধিকারিক। একই সঙ্গে আচমকা নারদ, সারদা এবং রোজভ্যালি-কাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিকদের বদলিকে রুটিন বা নিয়মমাফিক বলে দাবি করেছিলেন শীর্ষ সিবিআই কর্তাদের একাংশ। কিন্তু, নারদ তদন্তের তদন্তকারী আধিকারিকের এই চিঠি গোটা বদলির ঘটনা নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলে দিল খোদ সিবিআইয়ের অন্দরেই।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রের খবর, রঞ্জিৎ কুমার যিনি নারদ তদম্তের দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি বদলির নির্দেশ পাওয়ার পরেই ই-মেল করেন খোদ সিবিআই অধিকর্তা ঋষিকুমার শুক্লকে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, তিনি সিবিআইয়ের বদলি সংক্রান্ত নিয়মাবলী উদ্ধৃত করে দাবি করেন যে, পাঁচ বছর পর পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনও আধিকারিকের শাখা পরিবর্তন করতে পারেন। অর্থাৎ যে আধিকারিক দুর্নীতি দমন শাখায় রয়েছেন, তাঁকে বিশেষ অপরাধ শাখায় বদলি করা যেতে পারে। ওই আধিকারিক ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, ‘স্টেশন’ পরিবর্তন অর্থাৎ কলকাতা থেকে দিল্লি বা অন্য কোনও শহরে বদলি করার ক্ষেত্রে সাধারণ ভাবে ১০ বছর ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয়। অর্থাৎ ১০ বছরের বেশি কোনও আধিকারিক কোনও শহরে কর্মরত থাকলে তাঁকে কর্তৃপক্ষ অন্য শহরে পাঠাতেই পারেন, বদলি করে। কলকাতায় রঞ্জিৎ কুমারের কার্যকাল ৮ বছর হয়েছে।
ওই সূত্রের খবর, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষতে লেখা ই-মেলে এই বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি রঞ্জিৎ কুমার ওই চিঠিতে দাবি করেছেন যে, নারদ তদন্ত এই মুহূর্তে খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে তাঁকে সরিয়ে দিলে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সূত্রের খবর, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন, এই বদলি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ কি না? সেটা যদি হয়, তবে তার কারণ কি, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
বুধবারই রঞ্জিৎ কুমারকে নয়াদিল্লির সদর দফতরে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তিনি নন, একই সঙ্গে বদলি করে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে থাকা রাজ্যের তিন হাই-প্রোফাইল মামলার তদন্তকারী আধিকারিকদেরও। সারদা মামলার তদন্তকারী আধিকারিক তথাগত বর্ধনকে বদলি করা হয় নয়াদিল্লির সদর দফতরে। নারদ মামলার তদন্তকারী আধিকারিক রঞ্জিৎ কুমারকে পাঠানো হয় নয়াদিল্লিতেই। রোজভ্যালি মামলার বর্তমান তদন্তকারী আধিকারিক শোজম শেরপাকে পাঠানো হয় ভুবনেশ্বরে। রোজভ্যালি মামলার আগের তদন্তকারী আধিকারিক ব্রতীন ঘোষালকেও ভুবনেশ্বরে বদলি করা হয়ে।
সারদা, রোজ ভ্যালি-সহ বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার তছরুপ নিয়ে তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে বলেই সিবিআইয়ের খবর। তদন্তের অন্তিম পর্বে হঠাৎ তিন সিবিআই অফিসারকে এ ভাবে বদলি করা হল কেন, সেই প্রশ্ন আগেই উঠছে। দীর্ঘ দিন ধরে তদন্ত চালিয়ে যাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল, তাঁদের সরিয়ে নতুন অফিসারদের আনা হচ্ছে কেন, সে প্রশ্নও উঠেছে। গত কাল এই বদলির নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরই বিষয়টি রুটিন বলে দাবি করেছিলেন সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তাদের একটা অংশ। কিন্তু, তার পরেই শুরু হয়েছিল জল্পনা। সেই জল্পনা আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিল এ দিন নারদ তদন্তকারী আধিকারিকের এই চিঠি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy