প্রশ্ন: দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে উন্নয়নে কী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন? কতটা কাজ হয়েছে?
উত্তর: ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প গড়া, স্থানীয় ভাবে ছোট প্রকল্প করে পানীয় জল, কঠিন বর্জ্য, রাস্তাঘাট তৈরিতে জোর দিই। অনেক ক্ষেত্রে সফল। তবে নানা বাধায় সব কাজ হয়নি।
প্রশ্ন: কোন বাধার কথা বলছেন?
উত্তর: করোনার সময়ে মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে বহু তহবিল রাজ্যে ফেরত পাঠাতে হয়। কাজও বন্ধ ছিল বহু দিন। পরে, একশো দিনের কাজও মানুষজনকে দেওয়া গেল না।
প্রশ্ন: প্রশাসনিক নানা কর্মসূচিতে সভাধিপতির ভূমিকা ম্লান ছিল বলে অনেকের দাবি। কী বলবেন?
উত্তর: করোনা পরিস্থিতি, একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। নানা ক্ষেত্রে প্রশাসনের সাহায্যও মেলেনি।
প্রশ্ন: সমস্যা কোথায়?
উত্তর: আগে কোন এলাকায় কোন কাজ গুরুত্ব পাবে, তার তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হত। প্রশাসন তা দ্রুত রূপায়ণ করত। বছর দুয়েক ধরে প্রশাসনই সব ঠিক করেছে। আমাদের মত কানে তোলা হয়নি। মানুষের দাবিদাওয়াও অনেক ক্ষেত্রে মেটেনি।
প্রশ্ন: সভাধিপতি হিসেবে কী করেছেন?
উত্তর: বার বার জেলাশাসক, প্রশাসনিক কর্তাদের সমস্যা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। লাভ হয়নি। মানুষ এলাকার সমস্যা জানাচ্ছেন, অথচ সভাধিপতি হয়েও প্রশাসনকে দিয়ে কাজ করাতে পারিনি। বৈঠকে যে সব কাজের তালিকা তৈরি হত, ব্লক দফতর সেগুলিকে গুরুত্ব দিত না। শেষের দিকে কোন তহবিলের টাকা কোথায়, কতটা খরচ হয়েছে, জানতেও পারিনি।
প্রশ্ন: দলের রাজ্য নেতৃত্ব বা রাজ্য প্রশাসনের কাছে সমস্যা তুলে ধরেননি?
উত্তর: মুখ্যমন্ত্রী জেলা পরিষদের কাজের হিসেব চাইলে দিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে সমস্যআগুলো বলারও চেষ্টা করেছি। আগামীতে বিধানসভায় সমস্যাটি তুলব। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সভাধিপতির গুরুত্ব কতটা, তা জেলাশাসক ও সভাধিপতি— উভয়ের কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার।
প্রশ্ন: দলের একাংশ অভিযোগ তুলছেন, সভাধিপতি কিছু কর্মাধ্যক্ষ ছাড়া বাকিদের গুরুত্ব দেন না।
উত্তর: সব কাজে শুধু কর্মাধ্যক্ষেরা নন, প্রত্যেক জেলা পরিষদ সদস্যদের মতামত নেওয়া হত।
প্রশ্ন: বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদ হওয়ায় দুর্নীতি, স্বজনপোষণের ঘটনা সামনে আসেনি বলে দাবি।
উত্তর: গত পাঁচ বছরে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি।
প্রশ্ন: সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের থেকে তৃণমূল নেতারা ‘কাটমানি’ নেন বলে অভিযোগ। আবাস যোজনার তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়েও গোলমাল বাঁধল।
উত্তর: কোনও জেলা পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ ওঠেনি। আবাস যোজনার তালিকা তৈরির সঙ্গে দলের সম্পর্ক ছিল না। সমীক্ষার পরে যে সব অযোগ্য নাম মিলেছিল, বাদ দেওয়া হয়েছে।
সাক্ষাৎকার: রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)