সম্মেলনের সাজ। নিজস্ব চিত্র
সিপিএমের দলীয় কোন্দলের রেশ ফের এসে পড়ল ছাত্র সংগঠনের জেলা সম্মেলনে। বৈষম্য ও অগণতান্ত্রিক কাজকর্মের অভিযোগ করে এসএফআইয়ের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্মেলন থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে গেলেন কিছু প্রতিনিধি। ভোটাভুটি ছাড়াই জেলা সম্পাদক ও সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হলেন যথাক্রমে অনির্বাণ রায়চৌধুরী ও বিশ্বরূপ হাজরা। বর্ধমানে সিপিএমের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে আগামী ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি কাটোয়ায় ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সম্মেলনেও ঝড়ের আভাস মিলছে।
বুদবুদে ২০১৭ সালে এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলনে ভোটাভুটি হয়েছিল। সম্মেলন-কক্ষে যাঁরা জয়ী হয়েছিলেন, তাঁদের বদলে দলের জেলা নেতৃত্বের মনোনীত প্যানেলকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই ঘটনার রেশ টেনেই এ বারের জেলা সম্মেলনে গলসি, ভাতার, মন্তেশ্বর, মঙ্গলকোটের অনেকে সম্মেলনে যাননি। দলীয় সূত্রের খবর, এ বার যাতে বুদবুদের মতো বা কিছু দিন আগে বেনাচিতিতে পশ্চিম বর্ধমানের এসএফআই জেলা সম্মেলনের মতো ভোটাভুটিতে দলের ‘পছন্দ’ যাতে আটকে না যায়, তার জন্য সক্রিয় হয়েছিলেন সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের একাংশ। সম্মেলন কক্ষে রবিবার ছাত্র সংগঠনের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে ভাতার থেকে আসিখ ইকবালের নাম প্রস্তাব করা হয়। তা নাকচ হতেই বঞ্চনার অভিযোগ করে স্লোগান দিতে দিতে বেরিয়ে আসেন ভাতারের কিছু প্রতিনিধি। তাঁদের শান্ত করতে এগিয়ে আসেন কালনা শহরের সিপিএম নেতারা। তবে কিছুটা দূর থেকে তাঁদের বুঝিয়ে আনা হলেও ওই ছাত্রেরা আর সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করেননি।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ছাত্র নেতারা নিজেরাই কমিটি তৈরি করেছেন। ভাল নেতৃত্ব দিতে পারবেন বলেই জেলা সম্পাদক ও সভাপতিকে পুনর্নির্বাচিত করা হয়েছে।’’ জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা পেয়েছেন প্রথম বর্ষের তিন জন। তবে সম্মেলন কক্ষ ছেড়ে বার হয়ে আসার ঘটনা নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘এ রকম কিছু দেখিনি।’’ রাজ্য সভাপতির আরও দাবি, ‘‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে নির্বাচন করুক, এসএফআই দেখিয়ে দেবে তার ক্ষমতা!’’
কালনা শহরের রিক্রিয়েশন ক্লাবে শনিবার শুরু হয় এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলন। পুরশ্রী মঞ্চে এ দিন ছিল জেলা কমিটি গঠন। জেলার এক এসএফআই নেতার অভিযোগ, ‘‘জেলা কমিটিতে আগের মতোই দামোদর লাইন কার্যকরী করা হয়েছে। উচ্চ পদে জায়গা দেওয়া হয়েছে রায়না, খণ্ডঘোষ, বর্ধমান সদরের প্রতিনিধিদের। অথচ ভাল কাজ করা সত্ত্বেও উচ্চ পদে ঠাঁই মেলেনি ভাতার, গলসির মতো কয়েকটি ব্লকের নেতাদের।’’ বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আর এক নেতাও বলেন, ‘‘দু’দফায় জেলা কমিটিতে রয়েছেন, এই কারণ দেখিয়ে কয়েক জনকে গত বার সরানো হয়েছিল। অথচ এ বার সে নিয়ম না মেনেই জেলা সম্পাদক ও সভাপতিকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হল!’’ সম্মেলন চলাকালীনই জামালপুরের বিক্ষুব্ধ ছাত্র নেতা সন্দীপ সাঁতরা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন, ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে..., তারা সমান ভাগীদার’! এসএফআই এবং সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি।
জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যা কমেছে আগের বারের ৯৯ থেকে কমে হয়েছে ৫১ জন। জেলা সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি হয়েছে ১৫ জনের। জেলা কমিটিতে এসেছে ২০টি নতুন মুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy