Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Pregnancy

প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব কম, তথ্য জোগাড়ে স্বাস্থ্য দফতর

প্রতিটি হাসপাতালেই প্রতি মাসে প্রসবের গড় সংখ্যা থাকে। তার খুব বেশি পরিবর্তন হয় না।

সন্তান গর্ভে আসার ২০ সপ্তাহের কাছাকাছি সময়ে রক্তচাপের হেরফের হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। ফাইল ছবি।

সন্তান গর্ভে আসার ২০ সপ্তাহের কাছাকাছি সময়ে রক্তচাপের হেরফের হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। ফাইল ছবি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৫:২৫
Share: Save:

প্রথম দফার লকডাউনের সময় কলকাতা ও জেলার প্রায় সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ তথা জেলা হাসপাতালে প্রসবের সংখ্যা কমে যাওয়ার তথ্য সামনে এসেছে স্বাস্থ্য দফতরের।

যে প্রশ্নটি এখন স্বাস্থ্যকর্তাদের ভাবাচ্ছে তা হল, যে সংখ্যাটা কমেছে, সেই সব প্রসব কোথায় হয়েছে? আসন্নপ্রসবারা পরিষেবা পেতে কোথায় গিয়েছিলেন?

প্রতিটি হাসপাতালেই প্রতি মাসে প্রসবের গড় সংখ্যা থাকে। তার খুব বেশি পরিবর্তন হয় না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গত মার্চ-এপ্রিল-মে মাসে যখন রাজ্য জুড়ে কড়া লকডাউন চলছিল, সেই সময়ে প্রায় সর্বত্র প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব অনেকটা কমেছে। কলকাতার নামী মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে জেলা হাসপাতাল বা জেলার মা ও শিশু হাব—কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব জায়গাতেই ২০১৯ সালের মার্চ-মে মাসের প্রসবের সংখ্যার তুলনায় ২০২০ সালের মার্চ-মে মাসের সংখ্যা অনেক কমেছে।

এর প্রধান কারণ, প্রসবের জন্য সব মায়েরা সময় মতো হাসপাতালে পৌঁছতে পারেননি। কারণ, যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। স্বাস্থ্যকর্তারা এটাও মেনে নিচ্ছেন যে, ওই সময় বহু নিশ্চয়যান ও ১০২ ডায়ালের অ্যাম্বুল্যান্স করোনা রোগীদের জন্য বা করোনা পরীক্ষার নমুনা বহনে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে অনেক প্রসূতি সময়মতো ওই গাড়ির সুবিধা পাননি।

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘শহর ও গ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ওই সময় ডেলিভারি অনেক কম হয়েছে, সেটা আমাদেরও নজরে রয়েছে। প্রসব তা হলে কোথায় হল বা আসন্নপ্রসবারা কোথায় গেলেন সেটা আমরাও বুঝতে চাইছি। সব তথ্য একত্রিত করার কাজ চলছে। বিশেষ করে যে সব হাসপাতালে ডেলিভারি খুব বেশি কমেছে, সেখান থেকে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। রাজ্যে মা ও শিশুর সার্বিক স্বাস্থ্য সূচকের ক্ষেত্রে এটা জানা খুবই জরুরি।’’

ওই সময় করোনার ভয়ে জেলায় বহু ছোটখাট নার্সিংহোম বন্ধ ছিল। ফলে সেখানেও খুব বেশি প্রসূতি যেতে পারেননি। কলকাতা বা জেলার প্রধান হাসপাতালগুলি বাদ দিলে পড়ে থাকে মহকুমা বা গ্রামীণ হাসপাতাল অথবা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যাতায়াতের অসুবিধার জন্য প্রসূতি সেখানে যেতে পারে, কিন্তু সমস্যা হল, ওই স্তরের বহু হাসপাতালে এখনও সিজারের পরিকাঠামো নেই। সেই রকম কেস পেলেই তারা রেফার করে দেয়। তা হলে প্রশ্ন ওঠে, গর্ভাবস্থা জটিল ছিল বা দ্রুত সিজার প্রয়োজন ছিল, এমন আসন্নপ্রসবারা দ্রুত পরিষেবা পেতে কোথায় গিয়েছিলেন?

আর একটা জায়গায় স্বাস্থ্যকর্তাদের ভয় রয়েছে। তা হল, পরিস্থিতির চাপে কি তা হলে অনেকে বাড়িতেই দাইয়ের সাহায্যে প্রসব করিয়েছেন বা বেআইনি ক্লিনিকের দ্বারস্থ হয়েছেন? সেটা হয়ে থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তার কুফল টের পাওয়া যেতে পারে। তা ছাড়া, এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ৭৫% (এনএফএইচএস-৪)— যা গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কেরল, তামিলনাড়ুর মতো অনেক রাজ্যের থেকে কম। তা এক ধাক্কায় আরও কমে যাতে পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy