শোভনের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দূরত্ব কমছে দেখেই রত্না আতঙ্কিত। —ফাইল চিত্র।
আরও বাড়ল সংঘাত। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন তাঁর স্ত্রী তথা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। শোভনের ফোন থেকে অশ্লীল ভাষায় হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানো হয়েছে তাঁকে— পর্ণশ্রী থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন রত্না। অভিযোগ উড়িয়ে শোভনের দাবি, বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা শুরু পরে রত্নার ফোন নম্বর তিনি ব্লক করে দিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপ করার প্রশ্নই ওঠে না।
এ বছর ভাইফোঁটার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনকেই ফোঁটা দেন মমতা। সেই দিন সন্ধ্যায়ই শোভনের ফোন থেকে তাঁর কাছে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ যায় বলে রত্না পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁকে একাধিক মেসেজ পাঠানো হয়েছে এবং অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বলেও রত্না পুলিশকে জানিয়েছেন।
২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে শোভন ও রত্নার বিরুদ্ধে। শোভন বিচ্ছেদ চান। কিন্তু রত্না বিচ্ছেদ মেনে নিতে রাজি নন। ফলে মামলা ক্রমশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কিন্তু পর্ণশ্রী থানায় রত্না যে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে শুক্রবার জানা গেল, ঘটনাপ্রবাহে তা একেবারেই নতুন মোড়।
আরও পড়ুন: রত্নায় আপত্তি, সরকারি আমন্ত্রণ ফেরালেন শোভন, গেলেন না চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তিতে
অভিযোগ যে তিনি জানিয়েছেন, তা রত্না চট্টোপাধ্যায় নিজেও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে আমার কাছে মেসেজ এসেছিল। তাতে বেশ কিছু অশ্লীল কথা লেখা ছিল। আমার মনে হয়েছে কথাগুলো পুলিশকে জানিয়ে রাখা দরকার। তাই জানিয়ে রেখেছি।’’
শোভন কিন্তু রত্নাকে কোনও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানোর কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘রত্নার নম্বর শুধু নয়, তাঁর ঘনিষ্ঠদের নম্বরও আমি অনেক দিন ধরেই ব্লক করে রেখেছি। মেসেজ পাঠানো বা হোয়াটসঅ্যাপ করার প্রশ্নই ওঠে না।’’ রত্নাই বরং তাঁকে নানা ভাবে বিরক্ত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন বলে শোভন এ দিন দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘নম্বর ব্লক থাকা সত্ত্বেও নানা ভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করেছিলেন রত্না। তার পর থেকে আমি ওই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করাই বন্ধ করে দিয়েছি। অভিযোগ যে সম্পূর্ণ ভুয়ো, সেটা খুব তাড়াতাড়িই প্রমাণ হয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের কাজে মন নেই, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
কিন্তু যে রত্না চট্টোপাধ্যায় কিছুতেই শোভনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি নন, তিনি আচমকা শোভনের বিরুদ্ধেই ভুয়ো অভিযোগ আনতে যাবেন কেন? শোভনের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দূরত্ব কমছে দেখেই রত্না আতঙ্কিত। ভাইফোঁটার দিন যে ভাবে শোভন ও বৈশাখী মমতার বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন, তাতে রত্না ‘নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগতে শুরু করেছেন বলে শোভন ঘনিষ্ঠদের মত। সেই কারণেই রত্না নতুন কোনও অভিযোগে শোভনকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছেন বলে তাঁরা দাবি করছেন। রত্না অবশ্য সে অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন।
তাঁর বিরুদ্ধে রত্নার আনা অভিযোগ যদি ভুয়োই হয়, তা হলে শোভনই বা চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে থাকছেন কেন?
শোভন জানিয়েছেন, তিনি চুপচাপ বসে থাকবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এত দিন রত্না নানা ভাবে বিরক্ত করার চেষ্টা করেছেন, আমি একে একে সেই পথগুলো বন্ধ করতে থেকেছি। থানায় যাইনি, সংবাদমাধ্যমকেও জানাইনি। কারণ বিষয়টা নিতান্তই ব্যক্তিগত জীবন সংক্রান্ত। কিন্তু বিরক্ত করার পথগুলো বন্ধ হতেই এ বার তিনি অন্য পথ নিয়েছেন। তাই আমাকেও এ বার পদক্ষেপ করতেই হবে। আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy