চর্চায়: পাশাপাশি ওই দুই ব্যানার। নিজস্ব চিত্র।
এ বার অনুব্রত মণ্ডলের জেলাতেও উপস্থিতি জানান দিলেন ‘দাদার অনুগামী’রা!
সোমবার রাতে জেলা সদর সিউড়ির একাধিক জায়গায় ফ্লেক্স টাঙানো থাকতে দেখা যায়। সাদা রঙের বেশ বড় ফ্লেক্সে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ঢাউস ছবি। তার নীচে লেখা ‘শুভেন্দু অধিকারী জিন্দাবাদ’ ও ‘আমরা দাদার অনুগামী’। ফ্লেক্সের কোথাও তৃণমূল কংগ্রেসের নামগন্ধও নেই! এই ফ্লেক্স ঘিরেই আপাতত সরগরম বীরভূমের রাজনীতি। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।
ইদানীং শুভেন্দুকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দলীয় পতাকা ছাড়াই দেখা যাচ্ছে। দলের একাংশের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে অন্য জল্পনারও জন্ম দিয়েছে। সিউড়ি শহরে ‘দাদার অনুগামী’দের ফ্লেক্স নিয়েও তাই জল্পনা তুঙ্গে। শাসক দলের দাবি, তৃণমূলকে বদনাম করতে বিজেপি এই চক্রান্ত করেছে। বিজেপি বলছে তৃণমূল কর্মীদেরই কাজ।
সোমবার রাতে সিউড়ির সুপার মার্কেটের উল্টো দিকে প্রথম ওই ব্যানার দেখা যায়। মঙ্গলবার সকাল দিকে সিউড়ির পোস্ট অফিস মোড়, এসপি মোড় সংলগ্ন এলাকার বেশকিছু জায়গায় ওই ব্যানার দেখা যায়। কিন্তু ‘দাদার অনুগামীরা’ কারা, এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর মেলেনি। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সেই ব্যানারগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। কারা খুলল,তাও পরিষ্কার নয়।
তৃণমূলের সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক বিকাশ রায়চৌধুরীর দাবি, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী আমাদের দলের মন্ত্রী, আমাদের দলের নেতা। এই যে সব ব্যানার-পোস্টার পড়ছে, সেটা বিরোধীদের চক্রান্ত, বিজেপির চক্রান্ত। মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছতেই ওরা এ ধরনের কাজ করছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওরা দেখতে পাবে, শুভেন্দু তৃণমূলে আছে ও থাকবে। তা ছাড়া এই জেলায় অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে আমরা সকলে এক সঙ্গে আছি।’’ বিকাশবাবু এ কথা বললেও দল সূত্রের খবর, জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই ফ্লেক্সের ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করেছেন। তাঁদেরই এক জন একান্ত আলোচনায় মানলেন, ‘‘যে জেলায় তৃণমূল এবং অনুব্রত মণ্ডল সমার্থক, সেই বীরভূমে আচমকা শুভেন্দুর অনুগামীদের ফ্লেক্স টাঙানো আমাদের পক্ষে বিড়ম্বনার তো বটেই। ফলে, খোঁজ রাখতে হচ্ছে।’’
বিকাশবাবুর অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। তাঁর পাল্টা দাবি, বিজেপি-র এ সব করার দরকার পড়ে না। এটা তৃণমূলেরই অন্দরের কোন্দলের ফল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কয়েক দিন আগেই শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন তিনি মাঠেঘাটে রাজনীতি করে উঠে এসেছেন লিফটের মাধ্যমে উপরে ওঠেননি। তাই ওই ধরনের নেতাকে অনেক মানুষই চান। তাঁরাই এই কাজ হয়তো করেছেন। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্কে নেই।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, দিন কয়েক আগেই নন্দীগ্রাম ও মেদিনীপুর শহরের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে শুভেন্দু নিজেই ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। তার পরে তাঁর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান ও দলত্যাগ নিয়ে জল্পনা জোরদার হয়েছে। জেলায় জেলায় ‘দাদার অনুগামী’দের ব্যানারে নানা কর্মসূচিও চলছে। কিন্তু, সে-সবের আঁচ এত দিন পড়েনি বীরভূমে। এ বার সেই তালিকায় এই জেলাও নাম লেখাল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
যদিও ঘটনা হল, এই জেলার সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর সেই অর্থে যোগাযোগ নেই। তিনি বীরভূমে এসেছেন হাতেগোনা কয়েকবার। জেলায় সেই ভাবে কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি কোনদিন হাজির থাকেননি। তা হলে রাতারাতি তাঁর ‘অনুগামী’ উদয় হল কোত্থেকে—আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে জেলার রাজনৈতিক মহলের অন্দরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy