Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কী অপরাধ করলাম যে গুলি করল পুলিশ? প্রশ্ন ওঁদের

গুলিবিদ্ধেরা সোমবারও দাবি করছেন, পুলিশই গুলি চালিয়েছে।

উদ্বেগ: বাঁকুড়া মেডিক্যালের সিসিইউয়ের বাইরে সৌমেনের জেঠু-জেঠিমা। সোমবার। ছবি: অভিজিৎ িসংহ

উদ্বেগ: বাঁকুড়া মেডিক্যালের সিসিইউয়ের বাইরে সৌমেনের জেঠু-জেঠিমা। সোমবার। ছবি: অভিজিৎ িসংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০২:০৬
Share: Save:

কী দোষ করেছিলেন, যে গুলি খেতে হল? বাঁকুড়া মেডিক্যালে শুয়ে এই প্রশ্ন তুললেন পাত্রসায়রের কাঁকরডাঙা মোড়ে গুলিতে জখম বিজেপি কর্মী তাপস বাউড়ি ও টুলুপ্রসাদ খাঁ। শনিবার বিকেলে বিজেপি কর্মীদের জমায়েতে তাঁদের উপরে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশের দাবি, গুলি অন্য কেউ চালিয়েছে। জমায়েত থেকেও গুলি চালানো হয়ে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও।

যদিও গুলিবিদ্ধেরা সোমবারও দাবি করছেন, পুলিশই গুলি চালিয়েছে। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের বেডে গলায় গুলির ক্ষত দেখাতে দেখাতে টুলুপ্রসাদ জানান, তিনি আনাজের ব্যবসা করেন। লোকসভা ভোটে এলাকার অনেককে বিজেপি করতে দেখে তিনিও সভা, মিছিলে যাওয়া শুরু করেছিলেন। তাঁর দাবি, ‘‘শনিবার বিকেলে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি দেখে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে শুধু জয় শ্রীরাম বলেছিলাম। তাতেই এত কাণ্ড ঘটে যেতে পারে, ভাবতে পারিনি। কী এমন অপরাধ করলাম যে পুলিশ গুলি মারল আমাদের?”

ডান কাঁধে গুলির চোট নিয়ে হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগে ভর্তি গাড়ি চালক তাপস বাউরি। ওই বিজেপি কর্মীর বক্তব্য, ‘‘বেঁচে আছি এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। গুলি খেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে গ্রামের আলপথ ধরে দৌড়োচ্ছিলাম। ক্লান্ত হয়ে এক জায়গায় বসে পড়ি। তখনই দেখি আমার খুড়তুতো ভাই সৌমেনকে কাঁধে করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তুলে নিয়ে আসছে কিছু লোকজন। কী দোষ ছিল আমাদের?”

সৌমেন ভর্তি রয়েছে সিসিইউ-তে। রবিবার এসেছিলেন তাঁর বাবা-মা। এ দিন তাঁরা ফিরে গিয়েছেন। সিসিইউ-এর সামনে এ দিন সকালে উৎকন্ঠা নিয়ে বসেছিলেন সৌমেনের জেঠু-জেঠিমা দিলীপ বাউরি ও চণ্ডী বাউরি। সিসিইউ থেকে কেউ বেরিয়ে এলেই সৌমেন কেমন আছে সেই প্রশ্ন করছেন তাঁরা। চণ্ডীদেবী বলেন, ‘‘রবিবার সৌমেন শুধু বলতে পেরেছিল সে বাড়ি ফিরতে চায়। সব সময় কথা বলতে পারছে না। আমাদেরও সব সময় ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। ছেলেটা যে কবে সুস্থ হবে, কে জানে!’’ দিলীপবাবুর প্রশ্ন, “টিউশনে যাওয়া ছেলেটা কী এমন অপরাধ করেছিল যে তাকে গুলি করতে হল?’’ পুলিশ অবশ্য দাবি করছে, শুধু ওই স্লোগান নয়, জমায়েত থেকে পুলিশের উদ্দেশে বোমা ছোড়া হয়েছিল। পরিকল্পনা করেই হামলা হয়েছে। যদিও তা আগেই উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। টুলুপ্রসাদ ও তাপসেরা দাবি করছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন কোনও ঝামেলার পরিকল্পনা ছিল না। উল্টে পুলিশই আমাদের মণ্ডল সভাপতিকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তায় ফেলে মারধর করে থানায় তুলে নিয়ে যায়। তাতেই গোলমাল ছড়ায়।’’

বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, “তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের বলছি ‘জয় শ্রীরাম’ শুনে অদ্ভুত আচরণ করা বন্ধ করুন। সমস্যা আপনা আপনিই মিটে যাবে।” যদিও তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরার দাবি, “বিজেপির উদ্দেশ্যই হল গণ্ডগোল পাকানো। পাত্রসায়রের ঘটনার দায় সম্পূর্ণ ভাবে ওদেরই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Injur Patrasayer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy