ফাইল চিত্র।
মাঝেরহাট সেতুর পুনর্নির্মাণের ক্ষেত্রে রেল এবং রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব একাধিক বার চোখে পড়েছে। শুধু তা-ই নয়, দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্বের কারণে সেতুর চূড়ান্ত নকশা অনুমোদনের কাজেও বিলম্ব হয়েছে।
টালা সেতুর ক্ষেত্রে সমন্বয়ের সেই ঘাটতি, সেই দূরত্ব চায় না রাজ্য এবং রেল। সমন্বয় নিয়ে সব রকম জটিলতা কাটাতে বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের বৈঠকে যৌথ টাস্ক ফোর্স গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চার সদস্যের ওই যৌথ কমিটিই এখন থেকে টালা এবং মাঝেরহাট সেতুর পুনর্নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ দেখাশোনা করবে।
টালা সেতু নির্মাণ নিয়ে জটিলতা কাটাতে এ দিন ফেয়ারলিতে পূর্ব রেলের সদর দফতরে সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মার সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এবং রাজ্য প্রশাসনের অন্য কয়েক জন কর্তা। সেই বৈঠকেই রেল-রাজ্য সমন্বয় বাড়াতে যৌথ টাস্ক ফোর্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রেল সূত্রের খবর, নবগঠিত টাস্ক ফোর্সে রেলেও চিফ ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার এবং শিয়ালদহের সিনিয়র ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ছাড়াও রাজ্যের পূর্ত দফতরের দু’জন ইঞ্জিনিয়ার থাকবেন।
পূর্ব রেলের সদর দফতরে এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ রেল এবং রাজ্যের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। প্রায় সওয়া এক ঘণ্টার বৈঠকের পরে দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্বের বরফ অনেকটাই গলেছে বলে রেল এবং রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর। বৈঠকের শুরুতেই উপস্থিত অন্য আধিকারিকদের কাছে টালা এবং মাঝেরহাট সেতু নিয়ে যাবতীয় জটিলতা কাটিয়ে ফেলার বার্তা দেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার। সময় ধরে কাজ শেষ করার উপরে জোর দেন দু’জনেই। তার পরেই দু’পক্ষের আধিকারিকদের নিয়ে যৌথ টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই বিষয়ে জানতে চাইলে রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘দুই তরফের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে যৌথ কমিটি গঠনের ফলে সমন্বয়ের কাজ অনেকটাই মসৃণ হবে।’’
টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরু করার আগে ভারী যান চলাচলের জন্য একটি লেভেল ক্রসিং তৈরির প্রস্তাব রাজ্যের পক্ষ থেকে রেলের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ওই লেভেল ক্রসিং তৈরির অনুমতি চেয়ে রেল বোর্ডের কাছে আগেই আবেদন করেছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন। তবে এই ক্ষেত্রে রেল বোর্ড কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠানোয় বিষয়টি বিলম্বিত হয়। ২৪ ডিসেম্বর রেলের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। শিয়ালদহ ডিভিশনের কর্তাদের আশা, খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলবে এবং তার পরেই লেভেল ক্রসিং তৈরির কাজ শুরু করা যাবে। লেভেল ক্রসিং তৈরি এবং রেলের অংশে টালা সেতু ভাঙার খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার। তবে সেতু কী ভাবে ভাঙা হবে কিংবা ঠিক কবে ওই কাজ শুরু হবে, সেই বিষয়ে এ দিনের বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়নি বলে রেল সূত্রের খবর।
নতুন টালা সেতুর নকশা নিয়ে এ দিন দু’পক্ষের আধিকারিকদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে এই বিষয়ে ফের দুই তরফের মধ্যে আলোচনা হতে পারে।
মাঝেরহাট সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করার আগে ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’ বা রেল নিরাপত্তা কমিশনার সেতুর খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাঁর পরিদর্শনের দিনক্ষণ স্থির হলেই দু’পক্ষের আধিকারিকেরা একযোগে ওই কাজে সহযোগিতা করবেন বলে স্থির হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy