Advertisement
০৪ জানুয়ারি ২০২৫
Indian Railways

বঙ্গে দূরপাল্লার ট্রেনের পথে যোগ হল ১৩ স্টেশন

সাধারণত প্রবল যাত্রী চাহিদা না থাকলে কোনও দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রাপথে নতুন কোনও স্টপ/স্টেশন যোগ করা হয় না।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৫
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ-বাংলায় ভোটের আগে তেরোটি স্টেশনে দূরপাল্লার মেল/এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তৃণমূল নেতৃত্ব এর পিছনে ভোট কুড়োনোর রাজনীতি রয়েছে বলে মন্তব্য করলেও রেলের দাবি, যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ছ’মাস তেভাগা এক্সপ্রেস রামপুর বাজার, সরাইঘাট এক্সপ্রেস ফালাকাটা, হাওড়া চক্রধরপুর স্পেশাল গড়বেতা, বিষ্ণুপুর, ওন্দাগ্রামের মতো মোট তেরোটি স্টেশনে দাঁড়াবে। ছ’মাসের পরে যাত্রী ভাড়া থেকে আয়-ব্যয়ের খতিয়ান দেখে ওই স্টপেজগুলিতে ভবিষ্যতেও ট্রেনগুলি দাঁড়াবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রেল মন্ত্রক। যদিও রাজনীতিকদের মতে, যে ভাবে এ বারের বাজেটে মেট্রো রেলে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে , নতুন স্টপেজ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা থেকে স্পষ্ট, ভোটের প্রচারে বাংলার রেলে কেন্দ্রীয় সাহায্যের বিষয়টি নিয়ে সরব হতে চলেছেন বিজেপি নেতারা।

সাধারণত প্রবল যাত্রী চাহিদা না থাকলে কোনও দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রাপথে নতুন কোনও স্টপ/স্টেশন যোগ করা হয় না। অতীতে ইউপিএ সরকারের আমলে জনমোহিনী নীতির কারণে সাংসদের দাবি মেনে স্টপেজ যোগ করার অজস্র নজির থাকলেও, নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পরে সেই প্রথা কার্যত তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু গত শুক্রবার রেল বোর্ড যে ভাবে এক ধাক্কায় পশ্চিমবঙ্গে ১৩টি নতুন স্টেশন বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রাপথে যোগ করেছে, তা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই স্টেশনগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ এলাকায়। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গে গত লোকসভায় অভূতপূর্ব জয় পেয়েছে বিজেপি। বিধানসভাতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রয়োজন রয়েছে। রাজনীতিকদের মতে, তৃণমূল সরকার ফালাকাটাকে পুরসভা ও বানারহাটকে ব্লকের মর্যাদা দিয়েছে। তার পরেই রেল ওই দুই স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে রাজনীতির অঙ্ক স্পষ্ট।

উত্তরবঙ্গে যেমন এক দিকে ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখার বাধ্যবাধকতা, তেমনই দক্ষিণবঙ্গে এ বার বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। তাই রেলকে হাতিয়ার করে স্থানীয় মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিতে নতুন স্টপেজের তালিকায় দক্ষিণবঙ্গের একাধিক স্টেশনকে বেছে নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এক ঝাড়গ্রাম স্টেশনেই এ বার থেকে দাঁড়াতে চলেছে পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস, গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস ও নীলাচল এক্সপ্রেস। আদ্রা ডিভিশনের খড়্গপুর-বাঁকুড়া-আদ্রা লাইনের ওন্দাগ্রাম স্টেশনে দাঁড়াতে চলেছে হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ও হাওড়া চক্রধরপুর স্পেশাল। চক্রধরপুর স্পেশাল ট্রেনটি এ ছাড়া দাঁড়াবে গড়বেতা ও বিষ্ণপুরেও।

সূত্রের মতে, বাংলায় ভোট ঘোষণার আগে দূরপাল্লার কিছু নতুন ট্রেন ঘোষণাও প্রাপ্তির তালিকায় থাকতে পারে বঙ্গবাসীর। রেল মন্ত্রকের ওই সিদ্ধান্তের পিছনে লোক দেখানোর রাজনীতি রয়েছে বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত ৩১টি প্রকল্প বন্ধ করে ১৩টি স্টপেজ দিয়ে রাজ্যের মানুষকে এরা খুশি করতে চাইছে। ভোটে হেরে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ট্রেন বাংলার সীমানায় আটকে গেলেই ছ’মাস পরে ওই স্টপেজগুলি প্রত্যাহার করে নেবে রেল। মানুষ সব বোঝেন।’’

বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের পাল্টা দাবি, ‘‘যারা উন্নয়ন চায় না, তারা সবেতেই রাজনীতি দেখে। হাজার-হাজার মানুষ ওই স্টেশনগুলি চেয়ে আবেদন করেছে রেলের কাছে। তাই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP North Bengal Indian Railways West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy