উত্তর কলকাতার একটি স্কুলে প্রাথমিকের ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল রাজমিস্ত্রিদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শৌচাগারে যাওয়ার সময়ে ছাত্রীদের চকোলেট বা লজেন্স খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার পর তাদের কুপ্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার তাঁরা স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার পদত্যাগের দাবি জানান কয়েক জন অভিভাবক। ঘটনাস্থলে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে যায় পুলিশ। তাঁদের সঙ্গেও অভিভাবকদের ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রধানশিক্ষিকাকে স্কুল থেকে উদ্ধার করে। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই ঘটনায় ছ’জনকে আটক করেছে।
শ্যামবাজারের কাছে শ্যামপুকুর এলাকায় একটি স্কুলের ঘটনা। মেয়েদের এই স্কুলে গত কয়েক দিন ধরে রাজমিস্ত্রিরা কাজ করছেন। অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই শৌচাগারের পথে ছাত্রীদের ডেকে তাঁরা নিরিবিলিতে নিয়ে যাচ্ছেন। এক ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে বাবা-মাকে সে কথা জানায়। তার বাবা-মা স্কুলে এসে খোঁজ নিয়ে এই ধরনের একাধিক ঘটনার কথা জানতে পারেন। তার পরেই অভিভাবকেরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্কুলের সামনে। প্রাথমিক ভাবে তাঁদের দাবি ছিল, প্রধানশিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করে কথা বলা। পরে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রধানশিক্ষিকার পদত্যাগের দাবি জানান।
আরও পড়ুন:
অভিযোগ, ছাত্রীদের বক্তব্য জানানো হলে প্রধানশিক্ষিকা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি জানান, বাচ্চারা মনগড়া কথা বলছে। তার পরেও অভিভাবকেরা না-থামলে স্কুল থেকে টিসি দিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন প্রধানশিক্ষিকা। এর পরেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলে। স্কুলের দরজা ঘিরে ফেলেন অভিভাবকেরা। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘আমার মেয়ের কাছে শুনে স্কুলে এসেছিলাম। জানতে পারলাম, আরও অনেকের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে। স্কুলে রাজমিস্ত্রিরা এই কাজ করছেন। বাচ্চাদের লজেন্স খাওয়ানোর নাম করে ডেকে নিয়ে যাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ কিছু বলছেন না! উল্টে আমাদের বলা হচ্ছে, বাচ্চারা মনগড়া কথা বলছে। টিসি দিয়ে দেওয়া হবে! ওই মিস্ত্রিদের অন্য দরজা দিয়ে বার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।’’
বিক্ষোভরত আরও এক অভিভাবক বলেন, ‘‘মুখে কালো কাপড় বেঁধে রাজমিস্ত্রিরা মেয়েদের শৌচাগারের দরজা ঠকঠক করছেন। শৌচাগারে একটা আলোও নেই। স্কুলের কি একটা আলো লাগানোর পয়সা নেই? আমরা প্রধানশিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। আমরা চাই উনি পদত্যাগ করুন।’’
পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন অভিভাবকদের কেউ কেউ। ঘটনাস্থল থেকে এক মহিলা বলেন, ‘‘পুরুষ পুলিশ এসে আমাদের মহিলাদের আটকাচ্ছে, ধাক্কা দিচ্ছে। মারধরও করেছে।’’ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি।