রবিবার উদ্বোধনের আগে নয়া বিতর্কে কল্যাণী এমস। — ফাইল চিত্র।
কল্যাণীতে এমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ঠিক আগে দানা বাঁধল নতুন বিতর্ক। নতুন বিল্ডিংয়ের জন্য নাকি নেওয়া হয়নি পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র! এই অভিযোগ তুলেছে খোদ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। রবিবার কল্যাণী এমসের উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু তার আগেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দাবি ঘিরে নয়া বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কল্যাণী এমসের। নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই এ বার আরও এক বিতর্ক। রাজ্য সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দাবি, কল্যাণী এমসের নতুন বিল্ডিংয়ের জন্য পরিবেশ সংক্রান্ত কোনও ছাড়পত্র নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য শনিবার বেলা ১২টায় একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। যদিও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও লেখা হয়নি যে, রবিবার মোদী কল্যাণী এমসের উদ্বোধন করতে চলেছেন। তবে শুধু কল্যাণী এমসই নয়, রবিবার একই সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী রাজকোট, মঙ্গলাগিরি, ভাটিন্ডা, রায়বরেলী এবং জম্মু এমসেরও উদ্বোধন করার কথা।
২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্যাণীতে এমস গড়ার কথা বলেন। মোদী সরকার অনুমোদন দেওয়ায় কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ১৮০ একর জমিতে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মেডিক্যাল কলেজটি চালু হয়। এ বার পূর্ণ রূপে হাসপাতাল চালু হতে চলেছে। রবিবার তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার আগেই নতুন বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, আসন্ন লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই কি তড়িঘড়ি এমস চালু করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার? তাই কি পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি? এ বিষয়ে কেন্দ্র বা এমস কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
যদিও কল্যাণী এমসে বিতর্ক কম হয়নি। নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তাতে বিজেপির একাধিক নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। গত নভেম্বরেই ভবানী ভবনে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করে কল্যাণী এমসের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা রামজি সিংহকে। কল্যাণী এমসে বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থায় চাকরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০২২ সালের মে মাসে কল্যাণী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মুর্শিদাবাদের এক যুবক। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, তাঁর কন্যা মৈত্রী দানা, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাসের নাম জড়িয়ে যায়। বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূ অনুসূয়া ঘোষ এবং নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে মৈত্রী দানা এমসে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে কাজ পেয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, দুই বিধায়ক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। ওই মামলার তদন্তভার সিআইডি নেয়। এফআইআর-ও দায়ের হয় চার বিজেপি বিধায়ক-সহ আট জনের বিরুদ্ধে। সেই বিতর্কের ঝড় এখনও স্তিমিত হয়নি। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান এমসের নতুন ভবনের জন্য দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি বলে দাবি করল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy