কলকাতার শারদোৎসবকে সাজিয়ে তুলতে প্রতি বছর বড় ভূমিকা নেন চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। বিভিন্ন থিম ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আলোকসজ্জায় নিত্যনতুন রূপ দেখা যায় উৎসবের আঙ্গিকে। আগামী বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় উদ্বোধন হবে জগন্নাথ মন্দিরের। সেই মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সৈকতনগরীতে এখন সাজো সাজো রব। সোমবার কলকাতা থেকে দিঘায় এসে হাজির হবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের বেশ কিছু মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তার আগেই জগন্নাথের থিম ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্রনগরীকে আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তুলেছেন চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। বিরাট আকারের গেট থেকে শুরু করে ছোট ছোট বক্স করে তুলে ধরা হয়েছে জগন্নাথের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বিষয়কে।
দিঘা শহর জুড়ে লাগানো হয়েছে মোট আটটি বড় ধরনের আলোর গেট। সেই আলোকসজ্জায় স্থান পেয়েছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের আদল। সঙ্গে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজায় থাকা ধর্মচক্র দিয়ে সাজানো হয়েছে গেটের চারদিক। কোনও কোনও গেটের মাথায় আলোকসজ্জা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, জগন্নাথ, বলরাম, ও সুভদ্রার আলো-মূর্তি। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে রয়েছে অজস্র কংক্রিটের থাম। বেশ কিছু গেটে জগন্নাথ মন্দিরের সেই থামগুলিকে আলোকসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ছোট ছোট বক্স তৈরি করে দিঘা জুড়ে মোট ৪৮টির বেশি জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার আলোকমূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। দিঘার প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে এই আলো লাগানো হয়েছে মন্দিরপ্রাঙ্গণ পর্যন্ত। আলোকসজ্জার নিরিখে যাতে ওল্ড দিঘা এবং নিউ দিঘার মধ্যে কোনও পার্থক্য না থাকে, সেই বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
দিঘার রাস্তাঘাট তথা মন্দিরপ্রাঙ্গণের পাশাপাশি আলোকমালায় সাজানো হয়েছে দিঘার সমুদ্রসৈকত। সেখানে অবশ্য আলোকসজ্জার ধরন বদলে গিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে জগন্নাথের প্রতিটি আধ্যাত্মিক রূপ দেখানো হয়েছে ছোট ছোট আলোকসজ্জার মাধ্যমে। প্রতিটি বাতিস্তম্ভে জগন্নাথের তিলক, বলরামের লাঙল, ধ্বজায় থাকা চক্র-সহ আরও নানান বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা ছিল উদ্বোধনের সময় শহরের সাজসজ্জার মাধ্যমে জগন্নাথদেবের আধ্যাত্মিক বিষয়গুলিকে তুলে ধরা। সেই ভাবনা থেকেই চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের কাছে নবান্নের পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছিল। পরিকল্পনা মেনেই নিজেদের কারিগরি শিক্ষা ব্যবহার করে আলোকসজ্জায় গোটা দিঘাকে জগন্নাথময় করে তুলেছেন চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। আলোকশিল্পী জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে আলোকসজ্জার মতো বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমাদের। আমরা আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। সব ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে জনতার উপর ছেড়ে দিই ভাল-মন্দের বিষয়টি। এ বারও জগন্নাথকে স্মরণ করে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। গত এক মাস নিরলস পরিশ্রম করেছি। মন্দির উদ্বোধনের সময় সাধারণ মানুষ এসে আলোকসজ্জার প্রশংসা করলেই আমাদের প্রয়াস সফল হবে।’’
- এ বার দিঘার মুকুটে নতুন পালক হিসাবে যোগ হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির।
- বুধবার অক্ষয়তৃতীয়ার শুভ লগ্নে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
- বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় হোমযজ্ঞ। বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে জগন্নাথের বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়। তার পর নিজহাতে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী। আরতিও করেন।
-
পুরীর মন্দিরের নিমকাঠ দিঘায় আসেনি, বিতর্কে ইতি টানল ওড়িশা সরকার! ‘বদনাম কেন রটালেন?’ প্রশ্ন তুললেন মমতা
-
মন্দিরের পাশে লেখা ‘জগন্নাথ ধাম’ উধাও হয়নি, দাবি করল পুলিশ! দায়ের করা হল গুজব ছড়ানোর অভিযোগে মামলা
-
মন্দিরের পাশে লেখা ‘জগন্নাথ ধাম’ উধাও! কৌতূহল দিঘায়, ছবি দিলেন শুভেন্দু, ব্যাখ্যা দিলেন অখিল এবং রাধারমণ
-
জগন্নাথধাম গায়ে লেগেছে, এত হিংসে কেন? আমরা তো পুরীতে যাই, ওড়িশা সরকারকে তোপ মমতার! আর কী বললেন?
-
দিঘায় জগন্নাথের মন্দিরে মাত্র সাড়ে ৩ দিনে ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী! দাবি ইসকনের রাধারমণের, পুজো হচ্ছে বাংলার মডেলেই