Advertisement
২৩ অক্টোবর ২০২৪
Calcutta High Court

পটাশপুরকাণ্ডে নাম জড়াল শাসকদলের! নির্যাতিতার দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের আর্জি কলকাতা হাই কোর্টে

গত ৬ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রামে প্রতিবেশিনীকে ধর্ষণ করে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছিল ৪ অক্টোবর।

Calcutta High Court

(বাঁ দিকে) পটাশপুরে ‘ধর্ষিতা’র মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মারধর অভিযুক্তকে। কলকাতা হাই কোর্ট (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪৫
Share: Save:

পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে মহিলাকে ধর্ষণ এবং বিষ খাইয়ে খুনের অভিযোগে নয়া মোড়। কলকাতা হাই কোর্টে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের আবেদন করল নির্যাতিতার পরিবার। আগেই মৃতার ছেলে জানিয়েছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তিনি খুশি নন। মঙ্গলবার হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের অবকাশকালীন বেঞ্চে ওই মামলা ওঠে। শুনানিতে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন পটাশপুরের বধূকে ধর্ষণ করা হয় প্রথমে। তার পর কীটনাশক খাইয়ে খুনে করেন শাসকদলের দুই কর্মী! ঘটনার সিবিআই তদন্ত ও দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার আবেদন জানিয়েছে পরিবার। অন্য দিকে, সংশ্লিষ্ট মামলায় রাজ্যের আইনজীবীও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেন। তিনি জানান, নির্যাতিতার দেহ সংরক্ষণ করা হয়েছে।

গত ৬ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রামে প্রতিবেশিনীকে ধর্ষণ করে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছিল ৪ অক্টোবর। তবে ৬ তারিখ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘নির্যাতিতা’র মৃত্যু হলে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। মৃত্যুসংবাদ গ্রামে পৌঁছতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের মহিলারা অভিযুক্তকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। চলে মারধর। পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। কিন্তু হাসপাতালে মৃত্যু হয় অভিযুক্তেরও।

তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে মৃতার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যায়, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। কিন্তু মৃতার পরিবার সেই রিপোর্টে খুশি নয়। পরিবারের দাবি, প্রয়োজনে আদালতের হস্তক্ষেপে তমলুকের বাইরে অন্য কোনও বড় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করতে হবে। মৃতার ছেলে বলছেন, ‘‘ময়নাতদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিষক্রিয়ার জেরেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন কিংবা ধর্ষণের মতো ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। এর পরেই পুলিশ মৃতদেহটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের জানায়। আমরা দেহ নিতে অস্বীকার করেছি।”

নিহতের মেয়ে ও আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেন কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন সৌমেন্দু। নিহত মহিলার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন বাম প্রতিনিধি সৈকত গিরি-সহ অন্যেরা। এর মধ্যে অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে অভিযুক্ত কংগ্রেস করতেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে দল বদলে শাসকদলে নাম লেখান তিনি। গত লোকসভা ভোটের আগে বুথ কমিটি থেকে অবশ্য তাঁকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। তা সত্ত্বেও খুনের ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা তৃণমূলের ফেস্টুন ছেঁড়ে। তাদের দাবি, দল তাড়ালেও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তলে তলে সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। সেই সুবাদে যথেষ্ট দাপটও ছিল।

মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট মামলায় দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর হাই কোর্ট জানায়, আদালত পরবর্তী নির্দেশ-না দেওয়া পর্যন্ত দেহ সংরক্ষণ করতে হবে। আগামী ২৯ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই সময়ের মধ্যে সব পক্ষকে হলফনামা দিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Patashpur Rape and Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE