Advertisement
১০ জানুয়ারি ২০২৫
Theft of Rice

‘চুরি’ হয়েছিল চালও, হয়নি কোনও তদন্ত

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল বলে তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। সব মিলিয়ে চুরি যাওয়া সেই চাল ও গমের মূল্য ৫০ কোটি টাকারও বেশি বলে দাবি উঠেছে।

rice

—প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৪:৩৫
Share: Save:

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ন্যায্য মূল্যের রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রির তদন্তে নেমেছে ইডি। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে খোলা বাজারে সেই সব সামগ্রী বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে। এ বার তদন্তকারীদের সূত্রে অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউটরের গুদাম থেকে সেই সব সামগ্রী ‘চুরি’ গিয়েছিল। তাঁদের দাবি, গত ১২ বছরে বহু বার চুরির অভিযোগ দায়ের হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি খাদ্য দফতর। শুধু নির্দেশিকা ও বিজ্ঞপ্তি জারি করেই দায় সেরেছিল। তদন্ত হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে খাদ্য দফতর এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের শোকজ় করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল বলে তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। সব মিলিয়ে চুরি যাওয়া সেই চাল ও গমের মূল্য ৫০ কোটি টাকারও বেশি বলে দাবি উঠেছে। ইডি সূত্রের দাবি, ঘটনার তদন্তে নেমে একাধিক নথি যাচাই করে দেখা যাচ্ছে, ডিস্ট্রিবিউটরের গুদামে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সামগ্রী পৌঁছনোর পরে তা ডিলার অর্থাৎ রেশন দোকানে পাঠানো হয়নি। এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি, প্রায় ৪০০০ মেট্রিক টনের বেশি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের চাল চুরি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পরে একাধিক ডিস্ট্রিবিউটর ইডির সঙ্গে যোগাযোগ করে বেশ কিছু নথি দিয়েছেন। তা ছাড়া বাকিবুর এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছে। রেশন চুরির বিষয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপিও উদ্ধার হয়েছে। এ বার খাদ্য দফতরের অফিসারদের একাংশকে তলব করা হবে বলে ইডি জানিয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুর প্রায় ১২ হাজারের বেশি ডিস্ট্রিবিউটর এবং ডিলারদের নিয়ে রেশন সামগ্রী বিক্রি করার বেআইনি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন, যেখানে খাদ্য দফতরের অফিসার ও কর্মীদের একাংশের যোগসাজশ ছিল। এমনকি, রেশন সামগ্রী চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ক্ষেত্রেও সেই অফিসারদের একাংশের সক্রিয় ভূমিকা ছিল বলে দাবি ইডির।

তদন্তকারীদের অনুমান, বাকিবুর-ঘনিষ্ঠ ডিস্ট্রিবিউটরেরা গুদাম থেকে রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করে তা চুরি গিয়েছে বলে খাদ্য দফতরকে জানিয়েছিলেন। তারপরে নিয়ম মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও চুরির তদন্ত হয়নি এবং কোটি কোটি টাকার সামগ্রী কোথায় পাচার হল তা-ও খতিয়ে দেখা হয়নি।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, এখনও পর্যন্ত চুরির অঙ্ক ৫০ কোটি টাকার বেশি মনে হলেও পরে তা আরও বাড়তে পারে। ইডি সূত্রে আরও দাবি, এমন নথিও পাওয়া গিয়েছে, যেখানে ডিস্ট্রিবিউটর এবং রেশন ডিলার একই পরিবারের সদস্য। সে কারণে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকার রেশন সামগ্রী চুরি যাওয়ার পরেও তেমন হইচই হয়নি বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা।

অন্য বিষয়গুলি:

ED West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy