রূপনারায়ণের চরে মাথা তুলছে হোটেল। নিজস্ব চিত্র।
ভরা রূপনারায়ণ। এক পাড়ে কোলাঘাট। অন্য পাড়ে হাওড়ার নাওপালা এবং ওড়ফুলির চর। নিয়ম ভেঙে ওই চরেই একের পর এক হোটেল তৈরির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, জলের ঝাপটায় যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য কংক্রিটের পাড় বাধাচ্ছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। এতে রূপনারায়ণের স্রোত বাধা পেয়ে কোলাঘাটের দিকের পাড়ে আছড়ে পড়ছে। সহজেই কোলাঘাটের দিকে ভাঙন বাড়ছে। বিস্তীর্ণ এলাকা রূপনারায়ণের গর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
পুর-এলাকা না হলেও রূপনারায়ণ সংলগ্ন কোলাঘাট শহর হিসাবেই পরিচিত। নদের বুকে নাওপালা এবং ওড়ফুলির চর ‘কোলাঘাট পিকনিক স্পট’ নামেই পরিচিত। কোলাঘাটের দেনানের ঠিক উল্টো দিকে সবুজ ঘেরা ওড়ফুলির চরে বছর চারেক আগে গড়ে ওঠে একটি বিলাসবহুল হোটেল। তারপর সেখানে মাথা তুলেছে আরও দুটি হোটেল। আর এখন কোলাঘাটের গৌরাঙ্গ ঘাটের উল্টো দিকে নাওপালার চরে প্রায় তিন বিঘা জমিতে শুরু হয়েছে আরও একটি হোটেল নির্মাণ। ওড়ফুলিতেও মস্ত হোটেল তৈরির কাজ চলছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হোটেলগুলি নির্মাণ করা হচ্ছে একেবারে রূপনারায়ণের গা ঘেঁষে। জোয়ারের সময় নদের ঢেউ যাতে হোটেলের কংক্রিটের ভিত না ভাঙে সে জন্য বোল্ডার, লোহার বিম দিয়ে রূপনারায়ণের স্রোতের মুখে তৈরি করা হচ্ছে শক্তপোক্ত গার্ডওয়াল। কেটে ফেলা হচ্ছে গাছপালা। এর জেরে ভাঙন শুরু হয়েছে কোলাঘাটের পীরতলা, স্কুল মোড়, দেনান এলাকায়। আশঙ্কা, নদের পূর্ব দিকে নির্মাণকাজ বন্ধ না হলে ক্রমে কোলাঘাট গ্রাস করবে রূপনারায়ণ। রূপনারায়ণের চরে সেচ দফতরের জায়গাতেই বেআইনি ভাবে ওই নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও নাওপালা চরে মাথা তোলা হোটেলের ম্যানেজার সুকান্ত ইন্দ্র বলেন, ‘‘এটি আমাদের রায়ত জায়গা। নদ থেকে ২৫০ ফুট (আনুমানিক ৭৭ মিটার) ছেড়ে নির্মাণ করছি।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলছেন, ‘‘নদ-নদীর সর্বোচ্চ জলস্তর থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও স্থায়ী নির্মাণ করা যায় না। রায়ত জায়গা থাকলেও করা যায় না।’’ অবিলম্বে রূপনারায়ণের চরে ওই নির্মাণ বন্ধে সেচমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে জেলা বন্যা-ভাঙন-খরা প্রতিরোধ কমিটি। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘কোলাঘাটকে বাঁচাতে অবিলম্বে নদের পূর্ব দিকের নির্মাণ বন্ধ করা প্রয়োজন।’’ হোটেলের জমিতে দফতরের অনেকখানি জায়গা রয়েছে বলে মানছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রও। তাঁর আশ্বাস, ‘‘অভিযোগ আমার নজরে এসেছে। বেআইনি নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy