Advertisement
E-Paper

ওএমআর তথ্য কী ভাবে দিল কমিশন

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে এত দিন ধরে কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় এসএসসি যা যা বলেছে তা কী ভাবে জানলেন কমিশনের কর্তারা?

— প্রতীকী চিত্র।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:০৯
Share
Save

তথ্যের অভাবে রাজ্যে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর মধ্যে ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’ বাছাই করতে পারেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, তথ্য না থাকলে এত দিন ধরে হাই কোর্ট এবং সুুপ্রিম কোর্টে এত হলফনামায় এত তথ্য তারা দিল কী ভাবে? খোদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কপূরের ডিভিশন বেঞ্চের রায়েও কার্যত এই প্রশ্ন উঠেছে। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এসএসসি যখন হাই কোর্টে প্রাথমিক হলফনামা দিয়েছিল এবং তার পরেও উত্তরপত্রে (ওএমআর শিট) পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর-সহ তথ্য জমা দিয়েছে, সে সময় কখনওই স্ক্যান করা ওএমআর শিটের তথ্য না থাকার কথা বলেনি।

সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণের পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে এত দিন ধরে কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় এসএসসি যা যা বলেছে তা কী ভাবে জানলেন কমিশনের কর্তারা? কেউ কেউ এ-ও সন্দেহ প্রকাশ করেছে যে প্রথমে কি এসএসসি-র হাতে তথ্য ভান্ডার ছিল এবং পরে তা ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছে? সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ সামনে আসার পরেই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অন্যতম আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘এই তথ্য এসএসসি কোথা থেকে পেয়েছিল, তা নিয়ে এ বার তদন্ত হওয়া উচিত। ডিজিটাল তথ্য কি হাতে ছিল এবং পরে তা উবে গিয়েছে কি না, তা নিয়েও বিশদে তদন্ত হওয়া উচিত।’’ আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, এই তদন্ত শুরু হলে নিয়োগ পরবর্তী সময়ে এসএসসি-র দায়িত্বে থাকা কর্তাদের ভূমিকাও আতশকাচের তলায় এসে যাবে।

প্রসঙ্গত, এসএসসি প্যানেলে এবং অপেক্ষমান তালিকায় (ওয়েটিং লিস্ট) থাকা কোনও চাকরিপ্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করেনি। ২০২২ সালের মে মাসে হাই কোর্টের নির্দেশে সেই তালিকা প্রকাশিত হয়। এসএসসি-র এই কাজ তথ্যে কারচুপি ঢাকা দিতে করা হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নও কার্যত সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উঠে এসেছে। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অনেকে বলছেন, তথ্য ভান্ডার না থাকলে এসএসসি কী ভাবে এই তালিকা প্রকাশ করল? কী ভাবেই তা তারও পরে তথ্য জানার অধিকার আইনে উত্তরপত্রের প্রতিলিপি চাকরিপ্রার্থীদের দিল? এ নিয়ে কোর্টেও প্রশ্ন উঠেছিল। এসএসসি তথ্য জানার অধিকার আইনে ওই উত্তরপত্রের প্রতিলিপি নিজেদের তথ্য ভান্ডারের বললেও পরবর্তী কালে কোর্টে দাবি করে যে সিবিআইয়ের বাজেয়াপ্ত করা তথ্য থেকে ওই প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাই করার সদিচ্ছা আদৌ এসএসসি-র ছিল কি?

রায় ঘোষণার পরে এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন যে তাঁরা কোর্টকে তথ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু কোর্ট তাতে সন্তুষ্ট হয়নি। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘এসএসসি বহুবার সুযোগ পেয়েছে। শুধু কলকাতা হাই কোর্ট তিন-তিন বার এসএসসিকে যোগ্যদের তালিকা দিতে বলেছিল। কিন্তু প্রতিবারই অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছিল এসএসসি। তাদের দেওয়া তথ্যের বাইরেও অযোগ্য প্রার্থী থাকতে পারে, তাও বলেছিল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

OMR Sheet Bengal SSC Recruitment Case West Bengal School Service Commission

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}