বন্ধ দোকানপাট।
পেশায় একজন মার্বেল মিস্ত্রি। পড়াশোনার দৌড়ও বেশি দূর নয়। সেই যুবক ইউটিউব দেখে বানিয়েছে আইইডি’র রেপ্লিকা। যা ঘিরে তোলপাড় পাঁশকুড়ার ফুলের উপত্যকা। প্রশ্ন উঠছে, এভাবে যদি ইন্টারনেট দেখে যে কেউ ‘বোমা’ বানিয়ে ফেলতে পারে, তাহলে আমজনতার সুরক্ষার কী হবে!
সেরহাটি বাজারে কার্তিক গাঁতাইতের দোকানে সন্দেহজনক বস্তু থাকার ঘটনায় পুলিশ ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা শেখ আসানুর আলিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় আসানুর ঠান্ডা মাথার ছেলে বলে পরিচিত। আগে কোনও অপরাধের সঙ্গে তার যোগ নেই বলে দাবি এলাকবাসীর। অন্যদিকে, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক কার্তিকও এলাকায় ‘অজাতশত্রু’ হিসাবে পরিচিত। এমন এক জনের দোকানে আইইডি’র রেপ্লিকা রেখে এভাবে আতঙ্ক ছড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা অমিতকুমার জানা বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক গ্রাস করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী যোগ যে নেই, তা-ই বা কে বলতে পারছে।’’ স্থানীয়দের দাবি, সন্দেহজনক বস্তুটি নিষ্ক্রিয় করার সময় বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গিয়েছিল।
শুক্রবার সকালে দোকান্ডা ঢোকার অনেক আগে থেকেই রাস্তার ধারে একাধিক জায়গায় মানুষের জটলা চোখে পড়েছে। তাঁদের আলোচনা একটাই, ‘টাইম বম্ব’। দোকান্ডা এলাকায় নদীর চরে কাজ করতে আসা মানুষজনের চোখেমুখেও ছিল আতঙ্কের ছাপ। সেরহাটি বাজারে এদিন সমস্ত দোকান খোলেওনি। সকালে কার্তিকের বাড়িতে ভিড় জমান এলাকার মানুষজন। বছর আটষট্টির কার্তিক বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে আমাদের বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। সবাই খুব আতঙ্কে রয়েছি।’’
গত শীতে দোকান্ডার ফুল বাগান পর্যটকদের আকর্ষিত করেছে। তাতে কিছুটা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছিলেন চাষিরা। এক ফুল চাষি মন্টু সামন্ত বলেন, ‘‘ফুলের টানে এলাকায় পর্যটক আসেন। সেই জায়গায় এ ধরনের ঘটনা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পর্যটক কমলে বাড়তি উপার্জনও বন্ধ হবে। এ ধরনের উপদ্রব বন্ধ করতে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সুনীলকুমার যাদব দাবি করেছেন, ভয় দেখাতে ধৃত ওই রেপ্লিকা বানিয়েছে। তবে বিজেপি’র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক বলছেন, ‘‘পুলিশ ঘটনাটিকে হালকা করে দেখাতে চাইছে। কেউ সাধ করে আইইডি বানায় না। এর পিছনে সন্ত্রাসবাদীদের মদতও থাকতে পারে। আমরা এনআইএ’র দাবি জানাচ্ছি।’’
তদন্ত যে দিকেই গড়াক, আপাতত সরগরম ফুলের উপত্যকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy