মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দেওয়াল লিখন স্পষ্ট ছিল। সেই মতো বুধবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া মাত্রই হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারির সুরে বলতে চাইলেন, তাঁকে জেলে ঢোকানো হলেও তিনি বিজেপি-বিরোধী লড়াই থেকে এক ইঞ্চিও সরবেন না!
বৃহস্পতিবার শান্তিপুরের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি থেকে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার গ্রেফতারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘আমাকে জেলে পুরলেও আামি জেল ফুটো করে বেরিয়ে আসব!’’ যদিও হেমন্তের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি মমতা। ঝাড়খণ্ডের সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে জমি দুর্নীতি মামলায় বুধবার গ্রেফতার করেছে ইডি।
মমতার ওই বক্তব্যকে অবশ্য প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য খোঁচা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাজেয়। কিন্তু তিনি আর তাঁর দল এবং সরকারের বিসর্জন ঠেকাতে পারবেন না। সময় ঘনিয়ে এসেছে। সেই কারণেই হয়তো এই কথা বলেছেন।’’
নাম না করে বিজেপির উদ্দেশে মমতা আরও বলেছেন, ‘‘আমরা সব চোর? আর আপনারা সাধু? সব চোরেদের জমিদার, জোতদার। মানুষের টাকা লুট করে বড় বড় কথা! চোরের মায়ের বড় গলা। শূন্য কলসি বাজে বেশি।’’ সেই সঙ্গে দলের কর্মীদের প্রসঙ্গেও শান্তিপুরের মঞ্চ থেকে মমতা বলে দেন, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কেউ চোর নয়। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না। তাই বলে হাত কেটে দিতে হবে?’’ মমতার বক্তব্য, সামান্য ভগ্নাংশের লোক দুর্নীতিতে জড়িয়ে গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দলের তরফে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা বলে গোটা তৃণমূলই ‘চোরেদের দল’, তা নয়! কোনও রাজনৈতিক দল ধারাবাহিক ভাবে ক্ষমতায় থাকলে কিছু ‘বেনোজল’ ঢোকে। রাজনীতির কারবারিদের অনেকেই এ কথা বলে থাকেন। সিপিএম জমানাতেও নব্বইয়ের দশক থেকে এই আলোচনা ছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। সম্ভবত তার রেশ টেনেই বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘সিপিএম থেকে কিছু লোক আমাদের দলে ঢুকেছিল। তারা বিভিন্ন অন্যায় করেছে।’’
পাশাপাশিই, কয়লা ও গরু পাচার নিয়ে বিএসএফ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, ‘‘গরু পাচার, কয়লা পাচার— যা হচ্ছে তাতেই তৃণমূলের নাম করছে! গরু পাচার হচ্ছে সীমান্ত দিয়ে। ওখানে পাহারা দেয় বিএসএফ। কয়লা কে দেখে? সিআইএসএফ। কাদের সংস্থা? কেন্দ্রের। কোল ইন্ডিয়া কাদের? কেন্দ্রের। সব তোমাদের! আর দোষ তৃণমূলের?’’ প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল এখনও জেলবন্দি। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর মেয়ে সুকন্যাও। কয়লা পাচার মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় নারুলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy