Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi Mamata Banerjee

‘মমতাজির সঙ্গে আমার দারুণ রিস্তা’, তৃণমূলের সঙ্গে বাংলার জোটে নতুন করে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ করলেন রাহুল

গত সপ্তাহে মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকেই মমতা বলে দিয়েছিলেন, ৪২টি আসনে একা লড়াইয়ের প্রস্তুতি রাখতে হবে।

I have a great rapport with Mamata Banerjee, said Rahul Gandhi

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৮
Share: Save:

সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে যে ভাবে আক্রমণ করেছিলেন, তাতে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে বাংলায় রাহুল গান্ধীর দলের সঙ্গে মমতার দলের আসন সমঝোতার সম্ভাবনা বুঝি শেষ হয়ে গেল। কিন্তু মঙ্গলবার অসমের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ফের সেই সম্ভাবনায় নতুন করে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন রাহুল স্বয়ং।

পার্ক সার্কাসের মঞ্চ থেকে সোমবার মমতা ‘ইন্ডিয়া’র সমালোচনা করেছিলেন। কংগ্রেসের নাম না করে বলেছিলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, যে রাজ্যে, যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, তারা সেই রাজ্যে লড়ুক। আর আপনারা ৩০০ আসনে একা লড়াই করুন। আমরা সাহায্য করব। তারা বলছে, তাদের মর্জিমতো হবে।’’ মমতার ওই বক্তব্য নিয়ে মঙ্গলবার রাহুলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে কংগ্রেসের নেতা বলেন, ‘‘আমাদের যে আসন বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া রয়েছে, তা চলছে। তার ফলাফল আসবে। ওই বিষয়ে আমি এখানে কোনও মন্তব্য করব না।’’ কিন্তু প্রায় এক নিশ্বাসে রাহুল বলেন, ‘‘মমতাজির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ও দলের সম্পর্ক (রিস্তা) খুবই ভাল। হ্যাঁ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই রকম (বিতর্ক) হয়। আমাদের কেউ কিছু বলে দেন। ওঁদের কেউ কিছু বলেন। এটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সে সব এতে (আসন বোঝাপড়ায়) বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।’’

গত সপ্তাহে মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকেই মমতা বলে দিয়েছিলেন, ৪২টি আসনে একা লড়াইয়ের প্রস্তুতি রাখতে হবে। এমনকি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী সম্পর্কে জেলা নেতাদের মমতা বলেছিলেন, উনি কোনও ‘ফ্যাক্টর’ নন। ওঁর কথা মাথাতেই আনতে হবে না। অভ্যন্তরীণ বৈঠকের পাশাপাশি সোমবার প্রকাশ্যেও মমতা কংগ্রেসের সমালোচনা করেন। যদিও তিনি কংগ্রেসের নাম করেননি। তবে কংগ্রেসকে মমতার আক্রমণে সবচেয়ে বেশি ‘সন্তুষ্ট’ হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। কারণ, তাঁরা মনে করছিলেন এর ফলে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার হাই কমান্ডের ইচ্ছা ধাক্কা খাবে। কিন্তু দেখা গেল স্বয়ং রাহুল জোটপ্রক্রিয়ায় নতুন ‘অক্সিজেন’ দিলেন।

উল্লেখ্য, আগামী বৃহস্পতিবার বাংলায় প্রবেশ করবে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’। ঢুকবে কোচবিহার দিয়ে। সমস্ত রাজ্যেই রাহুলের এই কর্মসূচিতে ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে কংগ্রেস। তবে কোচবিহারে তৃণমূল যাবে কি না, তা মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দলের তরফে জানানো হয়নি। আবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মমতার সোমবারের ‘আগ্রাসী’ মন্তব্য রাজ্য সিপিএমে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘তৃণমূল ওই কর্মসূচিতে না থাকলে আমাদের দলের প্রতিনিধি থাকবেন।’’ যদিও তার পরে দুপুরেই রাহুল অসম থেকে কালীঘাটকে ফের এক বার ‘জোটবার্তা’ দিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে এর আগে কখনও কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ স্থানীয় নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। তবে আনন্দবাজার অনলাইনে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই লেখা হয়েছিল, বাংলায় আসন কংগ্রেস-তৃণমূলের আসন বোঝাপড়া নিয়ে রাহুল-মমতার প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। যদিও মাঝে নানা কারণে তাতে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। বাংলায় ঢোকার ৪০ ঘণ্টা আগে ফের জোট-জল্পনা উস্কে দিলেন রাহুল। যে পদক্ষেপকে অনেকে বলছেন, কৌশলে তৃণমূলের কোর্টে বল পাঠানো। এখন দেখার, তৃণমূল ওই বিষয়ে পাল্টা কী বার্তা দেয়। তবে অনেকের মতে, রাহুল জোট ভাঙার ‘দায়’ নিতে চাইছেন না। তাই তিনি জোটের জল্পনা জিইয়ে রেখে থাকতে পারেন। জোট হবে কি না, তা নির্ভর করছে মমতা কংগ্রেসকে রাজ্যে ক’টি আসন ছাড়বেন, তার উপর। আবার অনেকের মতে, মমতা কংগ্রেসকে দুই থেকে তিনটি আসন ছাড়তে পারেন। কিন্তু এখনই তিনি তা চূড়ান্ত করতে চাইছেন না। ‘একলা’ লড়ার প্রস্তুতির কথা বলে কংগ্রেসের উপর ‘চাপ’ তৈরি করে রাখতে চাইছেন। যাতে দর কষাকষির টেবিলে শেষ পর্যন্ত তৃণমূলই লাভবান হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy