ববিতা এবং সঞ্জয়। ফাইল চিত্র ।
যাঁর লড়াইয়ের জেরে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল আদালত, তিনি শিলিগুড়ির মেয়ে ববিতা। ববিতা সরকার। বিবাহিতা। স্বামী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার। গত পাঁচ বছর ধরে সংসার সামলে ‘প্রভাবশালী’ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন ববিতা। তবে পাশে পেয়েছিলেন স্বামী সঞ্জয় কর্মকারকে। লড়াই কঠিন হবে জেনেও হাল ছাড়েননি ববিতা এবং তাঁর স্বামী সঞ্জয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে সেই হাল না ছাড়া অদম্য লড়াইয়ের গল্প বললেন সঞ্জয়।
সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমি ববিতার জন্য গর্ববোধ করছি। সত্যের জয় হল। আমরা ন্যায্য দাবি করেছিলাম। আজ আমার পরিবার খুবই খুশি। আমরা কারও বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত লড়াই করিনি। কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই লড়াই ছিল না। আমরা ন্যায়ের অধিকারের জন্য লড়েছি।’’
তবে লড়াই ছিল মন্ত্রী এবং তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে। তা-ও আবার খোদ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী! কতটা প্রতিকূলতার মধ্যে লড়াই করতে হয়েছে তাঁদের? উত্তর দিলেন সঞ্জয়। তিনি জানান, ‘‘অবশ্যই এই লড়াই কষ্টের ছিল। আমরা বিভিন্ন অফিসে ঘোরাঘুরি করেছি। স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদেরও জানিয়েছি। কিন্তু কোথাও কোনও উত্তর পাইনি। তাই অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ’’
২০১৯-এ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা করেছিলেন ববিতা। অঙ্কিতার বাবা যে মন্ত্রী, তখনও জানতেন না ববিতা বা সঞ্জয়। পরে জানতে পারেন। কিন্তু তখনও ‘ক্ষমতার ঝড়ে’ উড়ে যাবেন, এই ভেবে পিছিয়ে যাননি তাঁরা।
সঞ্জয় জানান, দুই সন্তান, সংসার সামলে মামলা চালিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টের ছিল। কিন্তু মনে করেছিলেন, তাঁদের কথা কেউ না কেউ এক দিন ঠিক শুনবে।
২০১০ নাগাদ ববিতার বিয়ে হয়েছিল অগ্নিনির্বাপক জিনিসপত্রের ব্যবসায়ী সঞ্জয়ের সঙ্গে। সে বছরই রেগুলার বিএডে চান্স পেয়েছিলেন ববিতা। ববিতা ২০১৬ সালে স্কুলশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেন। মেধাতালিকা প্রকাশ হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর। সেই তালিকায় অবশ্য ববিতার নাম প্রথম ২০তেই ছিল। কিন্তু পরে সেই তালিকা বাতিল করে দেয় এসএসসি। নতুন তালিকায় এক ঘর পিছিয়ে যায় ববিতার নাম। ববিতার থেকে ১৬ নম্বর কম পেয়েও মেধা তালিকার শীর্ষে ওঠে পরেশ-কন্যা অঙ্কিতার নাম। নতুন তালিকায় ববিতার নাম চলে যায় ওয়েটিং লিস্টে। তার পরই শুরু হয় তাঁর দৌড়ঝাঁপ।
অবশেষে সেই লড়াই মর্যাদা পেল শুক্রবার, কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy