ছবি: সংগৃহীত
ভুরি ভুরি ভুয়ো নাম দ্বিতীয় দফাতেও। বেশির ভাগ আবেদনকারীর সব দো’তলা-তিনতলা পাকা বাড়ি। পেশায় কেউ সরকারি হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক, কেউ নার্স, কেউ পার্শ্বশিক্ষক, কেউ আবার ব্যবসায়ী।
ঘূর্ণিঝড় আমপানে ভাঙা বাড়ির ক্ষতিপূরণ নিয়ে এর আগে দুর্নীতির হাজারো অভিযোগ, তদন্ত, নতুন তালিকা তৈরি— সবই হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কেউ যাতে ক্ষতিপূরণে বঞ্চিত না থাকেন, সে জন্য গত ৬ ও ৭ অগস্ট ফের আবেদন জমার সুযোগ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। জেলায় জেলায় অঢেল আবেদন জমা পড়ে। তদন্তের পরে ভুয়ো নাম বাদ দিয়ে শুক্রবার তালিকা প্রকাশ করেছে প্রশাসন। দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ আবেদনই বাতিল হয়ে গিয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই এক ছবি। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফায় প্রায় ২ লক্ষ ১১ হাজার আবেদন জমা পড়ে। তদন্তের পরে ৬৪,৮০৬ জন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ও ১,৪২৩ জন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকের নাম ক্ষতিপূরণের জন্য গৃহীত হয়েছে। প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫১৫টি আবেদন বাতিল হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও ৭৬ শতাংশ আবেদন বাতিল হয়েছে। প্রায় ২ লক্ষ ৬৪ হাজার আবেদনের মধ্যে ১ লক্ষ ৯৯ হাজারই বাতিল হয়ে গিয়েছে। জেলার কেশিয়াড়ি ব্লকে ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে আবেদন করেছিলেন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নার্স, স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক, সরকারি হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসকও। সরকারি আধিকারিকেরা গিয়ে দেখেন, তাঁদের পাকা বাড়ির বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। তবে কেন আবেদন? এক ব্যবসায়ীর দাবি, ‘‘আমার নামে অন্য কেউ আবেদন করতে পারে।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও বিভিন্ন ব্লক অফিসে তালিকা টাঙানোর পরে দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যা নাম রয়েছে, তার কয়েকগুণ আবেদন জমা পড়েছিল। যেমন, ক্যানিং ১ ব্লকে আবেদন জমা পড়েছিল ৬২৯১টি। তালিকায় নাম রয়েছে মাত্র ৬৫৬ জনের। উত্তর ২৪ পরগনা জুড়েও প্রচুর আবেদন বাতিল হয়েছে। দেগঙ্গা ব্লকে যেমন ২৮৩৯টি আবেদনের মধ্যে ৯০৩ জনকে তালিকায় রাখা হয়েছে। বাগদা ব্লকে আবেদন জমা পড়েছিল ১১,৯৪০টি। আংশিক ক্ষতির তালিকায় নাম উঠেছে ২,২০৬ জনের। আর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় নাম রয়েছে মাত্র তিন জনের।
বহু ভুয়ো আবেদনকারীর খোঁজ মিলেছে পূর্ব বর্ধমানে। ৫,৩১৪টি আবেদনের মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ২৯৭টি বাড়ির ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১,৪৯৪টি বাড়ি। সব থেকে বেশি আবেদন জমা পড়ে মেমারি ১ ব্লক থেকে। কিন্তু তদন্তের পরে দেখা যায় ৬০ শতাংশ আবেদন ভুয়ো। ফর্মে দেওয়া ফোন নম্বর বা ঠিকানার হদিশ মেলেনি। আবার পাকা বাড়ির মালিকেরা আবেদন করেছেন, এমনটাও মিলেছে। হাওড়া, হুগলি, নদিয়া— সর্বত্র এক ছবি। নদিয়ায় প্রায় ১৬ হাজার আবেদনের মধ্যে মাত্র ৯৮ জনের সম্পূর্ণ ও ৭,২১৪ জনের আংশিক ক্ষতির আবেদন অনুমোদন পেয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদে দ্বিতীয় দফায় আবেদন জমা পড়েনি। এখানে পুরনো তালিকা অনুযায়ীই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy