ধৃত সুরজিৎ এবং থানায় শৌভিকের অভিযোগপত্র। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আয়কর বিভাগের পাঠানো বকেয়া কর জমা দেওয়ার নোটিস পেয়ে চমকে গিয়েছিলেন হাওড়ার চামরাইল দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা শৌভিক ঘোষ। একটি অনলাইন বিপণন সংস্থার ডেলিভারি বয়ের চাকরি করা ২৯ বছরের ওই যুবকের মাসিক আয় হাজার পনেরো টাকা। কিন্তু আয়কর বিভাগের নোটিসে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে জানানো হয়, শৌভিক এমন একটি কোম্পানির মালিক যার বার্ষিক লেনদেন সাড়ে ৮ কোটি টাকারও বেশি। মুনাফার অঙ্ক ১৪ লক্ষ টাকা!
কলকাতার আর্মেনিয়ান স্ট্রিটে ওই কোম্পানির দফতরের ঠিকানাও দেওয়া ছিল আয়কর বিভাগের নথিতে। সেই সূত্র ধরে খোঁজখবর শুরু করতে গিয়ে শৌভিক দেখেন সেটি ভুয়ো। এর পরে আয়কর বিভাগ, বিক্রয়কর বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় লিলুয়া থানাতেও অভিযোগ জানান তিনি। আর সেই তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে এক অভিনব জালিয়াতির সন্ধান মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। ঘটনার জেরে বুধবার রাতে সুরজিৎ দত্ত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শৌভিকের দাবি, কয়েক মাস আগে তাঁর পরিচিত ভোলা ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে ‘ট্রেড লাইসেন্স’ করানোর কথা বলেছিলেন। তাঁর মাধ্যমে যোগাযোগ করে লাইসেন্সের জন্য আধার, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের কাগজপত্র-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথিও দিয়েছিলেন। তাঁর অজান্তে সেই নথি ব্যবহার করে অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন শৌভিক। তিনি অভিযোগপত্রে লিখেছেন, ‘‘আমার নথি ব্যবহার করে ‘শিব ট্রেডিং কোম্পানি’ নামে একটি সংস্থা খোলা হয়েছিল। ট্রেড লাইসেন্স করানোর জন্য আমি অনিমেষ বাঙাল নামে এক অ্যাকাউন্ট্যান্টের সাহায্য নিতে গিয়েছিলাম। তিনিই এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেন।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (নর্থ) অনুপম সিংহ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক ব্যক্তি লিলুয়া থানায় অভিযোগ করেন। তিনি জানান, নতুন একটি কোম্পানি খোলার জন্য বৈধ কাগজপত্র বানাতে গিয়ে দেখেন যে তাঁর প্যান কার্ড, আধার কার্ড ব্যবহার করে তাঁর অপরিচিত এক ব্যক্তি অন্য একটি কোম্পানি খুলেছেন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর কোনও পরিচয় নেই। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম সুরজিৎ দত্ত। তিনি নিজেকে ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট’ পরিচয় দিয়ে কোম্পানি খুলেছেন। সেই কোম্পানি আদতে ভুয়ো।
বুধবার রাতে লিলুয়া থানার পুলিশ সুরজিৎকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। অনুপম বলেন, ‘‘কোন উদ্দেশ্যে অন্যের পরিচয়পত্র দিয়ে ভুয়ো কোম্পানি এবং অ্যাকাউন্ট খোলা হল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কত টাকা লেনদেন হয়েছে এবং কেন হয়েছে, এর পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, সব কিছু তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে অন্য কেউ বা কারা জড়িত কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy