Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পাঁচিল ভাঙতে নারাজ হাসপাতাল, আমতায় থমকে গিয়েছে রাস্তার কাজ

এক দিকে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের পাঁচিল। উল্টো দিকে, অন্তত ৫০টি দোকান। দোকানদাররা তাঁদের দোকানের একাংশ ভাঙতে রাজি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচিল ভাঙতে চান না। নারাজ বিধায়ক নির্মল মাজিও।

এই পাঁচিল ভেঙেই রাস্তা চাওড়া হওয়ার কথা। ছবি: সুব্রত জানা।

এই পাঁচিল ভেঙেই রাস্তা চাওড়া হওয়ার কথা। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আমতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০০:৫৪
Share: Save:

এক দিকে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের পাঁচিল।

উল্টো দিকে, অন্তত ৫০টি দোকান।

দোকানদাররা তাঁদের দোকানের একাংশ ভাঙতে রাজি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচিল ভাঙতে চান না। নারাজ বিধায়ক নির্মল মাজিও। ফলে, জমি নিয়ে টানাপড়েনের জেরে প্রায় দু’মাস ধরে আমতার কলাতলা থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ থমকে রয়েছে। এলাকার দীর্ঘদিনের যানজট কাটাতেই রাস্তাটি সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ত (সড়ক) দফতর। কিন্তু জমি না মেলায় তারা পড়েছে ফাঁপরে।

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার অনিল সিংহ। তিনি বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানানোয় দোকানদারদের দোকান সরিয়ে জমি দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু দোকানদাররা দোকানের একাংশ ভাঙতে রাজি হলেও পুরো দোকান সরাতে চান না। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনিক স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় জনসংখ্যা এবং যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় ২০০৭ সাল নাগাদ আমতা বাসস্ট্যান্ড থেকে রানিহাটি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৬ কিলোমিটার রাস্তাটি চওড়া করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। রাস্তাটি ১৮ ফুট চওড়া। সিদ্ধান্ত হয়, দু’ধারে সাত ফুট করে রাস্তাটি চওড়া করা হবে। প্রায় সাত বছর থমকে থাকার পরে সেই কাজ শুরু হয় গত বছর মার্চে। রানিহাটি থেকে কলাতলা পর্যন্ত বর্তমানে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কিন্তু কলাতলা থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার কাজে হাত দিতে পারেনি পূর্ত (সড়ক) দফতর। কেননা, ওই রাস্তার উপরেই এক দিকে আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল। উল্টো দিকে অন্তত ৫০টি ছোটবড় দোকান।

কেন পাঁচিল ভাঙতে আপত্তি আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের?

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে সব সময়েই রোগীর চাপ থাকে। দীর্ঘদিন হাসপাতাল চত্বরে কোনও পাঁচিল না-থাকায় রাতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। বাইরের আবর্জনা চত্বরে ফেলা হচ্ছিল। ফলে, চত্বর দূষিত হচ্ছিল। তা ছাড়া, ছিল অনধিকার প্রবেশের সমস্যাও। এ সব এড়াতেই ২০১২ সালে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজির উদ্যোগে প্রায় ১০ লক্ষ টাকায় পাঁচিলটি গড়া হয়। তা ভেঙে ফেললে ফের পরিবেশ নষ্ট হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, “আমরা সমস্যার কথা পূর্ত (সড়ক) দফতরকে জানিয়েছি।” বিধায়ক নির্মলবাবু বলেন, “পাঁচিল দিয়ে হাসপাতালের পরিবেশ রক্ষা করা গিয়েছে। পাঁচিল ভাঙা যাবে না। পূর্ত (সড়ক) দফতরকে নকশা বদলে উল্টো দিক থেকে জমি নিয়ে রাস্তা করতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতিতেও আলোচনা হয়েছে।”

পক্ষান্তরে, রাস্তার নকশা বদলে শুধু হাসপাতালের উল্টো দিকের দোকান সরিয়ে জমি নেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের পক্ষে উলুবেড়িয়া পূর্ব ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবীন শাসমল বলেন, “এটা কোনও দিন হতে দেব না। পাঁচিল বাঁচিয়ে শুধু দোকানদারদের স্বার্থ নষ্ট করা মেনে নেব না। আমরা দোকানের একাংশ ভেঙে দিতে রাজি। কিন্তু পুরো দোকান ভাঙা যাবে না। প্রয়োজনে আইনের সাহায্য নেব।”

এই টানাপোড়েন সামলে পূর্ত (সড়ক) দফতর রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ কবে শুরু করতে পারে, এখন সেটাই দেখার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy