Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
আরামবাগে দুর্ভোগে যাত্রীরা

নৌকায় চোলাই তোলার প্রতিবাদে বন্ধ ফেরি চলাচল

নৌকায় চোলাই মদ বহন করা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন যাত্রীরা। তার জেরে গোলমালে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ফের পারাপার। গত সোমবার রাত থেকে আরামবাগের মলয়পুর-২ পঞ্চায়েতের কেশবপুর ফেরিঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দু’দিকের এলাকার কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। মিনিট পনেরোর জলপথের পরিবর্তে এখন সড়কপথে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে দুই পাড়ের লোকজনের বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা পঞ্চায়েত প্রধান এবং বিডিওর কাছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৪৭
Share: Save:

নৌকায় চোলাই মদ বহন করা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন যাত্রীরা। তার জেরে গোলমালে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ফের পারাপার।

গত সোমবার রাত থেকে আরামবাগের মলয়পুর-২ পঞ্চায়েতের কেশবপুর ফেরিঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দু’দিকের এলাকার কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। মিনিট পনেরোর জলপথের পরিবর্তে এখন সড়কপথে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে দুই পাড়ের লোকজনের বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা পঞ্চায়েত প্রধান এবং বিডিওর কাছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর এই ফেরিঘাটের গোলমাল নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান নির্দলের (দলীয় টিকিট না পেয়ে এখানে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলরা নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পঞ্চায়েত দখল করে। আনোয়ারা বেগম বলেন, “দুই পাড়ের বাসিন্দাদের অসুবিধা নিয়ে প্রচুর অভিযোগ পাচ্ছি। ঘাট ইজারাদারও তাঁর ছেলেকে মারধরে করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। সমস্ত বিষয়টা বিডিওকে জানিয়েছি।” আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই বলেন, “এ ভাবে তো চলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসে সমাধান সূত্র বের করা হবে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সাল থেকে পূর্ব কেশবপুর এবং পশ্চিম কেশবপুরের সংযোগের জন্য ফেরিঘাটটি চলছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ যাতায়াত করেন। পঞ্চায়েত অফিস, ব্যাঙ্ক, কলেজ, স্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সবই পশ্চিম কেশবপুরে, পূর্ব কেশবপুরেও স্কুল আছে, ফেরিঘাট বন্ধ হওয়ায় দুই পাড়ের

ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে সড়ক পথে কাবলে এবং হরিণখোলা হয়ে প্রায় দেড়ঘন্টা ঘুর পথে যেতে হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিম কেশবপুর থেকে পূর্ব কেশবপুরে আসার সময় এক ব্যক্তি তাঁর সাইকেলের ক্যারিয়ারে চোলাইয়ের বড় জ্যারিকেন নিয়ে নৌকায় উঠলে কয়েক জন ছাত্র প্রতিবাদ করে। ওই ব্যক্তিকে নৌকা থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবি তোলে তারা। এ নিয়ে মাঝি তথা ফেরিঘাট ইজারাদারের ছেলে সুভাষ মালিকের সঙ্গে ছাত্রদের বচসা বাধে। শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের দাবি মেনে ওই ব্যক্তিকে চোলাইয়ের জ্যারিকেন-সহ নামিয়ে দেওয়া হয়। তখনকার মতো ঘটনাটি মিটে গেলেও রাত আটটা নাগাদ ফের গোলমাল বাধে। তৃণমূলের জনা কুড়ি ছেলে এসে সুভাষ মালিককে তাদের নেতা মিনাজ আহমেদ ডেকেছে বলে জানায়। সুভাষের বাবা দিলীপ মালিকের অভিযোগ, “ছেলে তাদের বলে রাত সাড়ে আটটায় ফেরি বন্ধ হলে যাবে। কিন্তু তারা তখনই যেতে হবে বলে ছেলেকে মারধর করতে থাকে। স্থানীয় নৌকাযাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তারা পালিয়ে যায়।”

নৌকায় চোলাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কেন প্রশ্ন করা হলে দিলীপবাবুর বক্তব্য, “আমার পারাপারের কাজ। কে কি নিয়ে যাচ্ছে তা দেখার অধিকার আমার নেই।” তাঁর দাবি, মিনাজ ঘাটের ইজারা পায়নি বলেই তার দলবল নিয়ে বারবার নানা অজুহাতে হামলা করছে। প্রশাসন থেকে এর বিহিত না করা পর্যন্ত তাঁরা পারাপার করবেন না। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিলীপবাবুর ভাইপো অতনু মালিককেও মারধরের অভিযোগ উঠেছিল।

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতা মিনাজ আহমেদ বলেন, “আমি এ সবের বিন্দুবিসর্গ জানি না। শুনেছি নৌকায় চোলাই নিয়ে যাওয়া নিয়ে যাত্রীরা আপত্তি তোলায় গোলমাল বাধে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ঘাটের ইজারা নিয়ে দিলীর যথেচ্চাচার চালাচ্ছে। মিথ্যা আভিযোগ তুলে মাঝেমধ্যেই ঘাট বন্ধ রাখে। সাধারণ মানুষের মানুষের অসুবিধা হয়। বিডিওকে সব জানানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

boat hooch protest ferry stopped arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE