উলুবেড়িয়া আদালতে বিক্ষোভ।
দু’টি দাবিতে আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে ব্যাহত হচ্ছিল উলুবেড়িয়া আদালতের বিচার সংক্রান্ত কাজকর্ম। মঙ্গলবার এক ধাপ এগিয়ে আইনজীবীরা এজলাসের সামনে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের নিয়ে আসা হলেও ওই বিক্ষোভের জেরে পুলিশ তাদের এজলাস পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেনি। আইনজীবীরা রীতিমতো বাধা দেন। ফলে, বিচার সংক্রান্ত কোনও কাজই এ দিন হয়নি। বিপাকে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা।
বিভিন্ন ব্যক্তির পরিচিতি, নাম, জন্ম-তারিখ সংশোধন প্রভৃতি ক্ষেত্রে ফার্স্ট ক্লাস জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের হলফনামা (শংসাপত্র) এবং ‘বেল-বন্ড পাওয়ার’ (অভিযুক্তকে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে জামিনদার অর্থাত্ আইনজীবী এবং মুহুরিদের আদালত নির্ধারিত টাকা) বাড়ানোর দাবিতে গত ১৯ নভেম্বর থেকে ওই আদালতে কর্মবিরতি করছেন সিভিল ও ফৌজদারি দুই বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা।
কর্মবিরতির জেরে আইনজীবীরা শুনানিতে সামিল না হলেও বিচারকেরা এত দিন বিভিন্ন মামলায় বাদী-বিবাদী দু’পক্ষের এবং পুলিশের বক্তব্য শুনে রায় দিচ্ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার আইনজীবীরা তাঁদের দাবি পূরণের জন্য বিচার প্রক্রিয়াতেও বাধা দিলেন। এ দিন আদালতে ১৩টি মামলা ছিল। কোনও মামলাই ওঠেনি।
আইনজীবীদের অভিযোগ, অন্য সব আদালতে ফার্স্ট ক্লাস জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলফনামা দিলেও এই আদালতে তা তিন বছর ধরে মিলছে না। অনেক আবেদনেও লাভ হয়নি। এতে তাঁরা ছাড়াও বহু ব্যক্তি এবং মুহুরিরাও সমস্যায় পড়ছেন। হলফনামার জন্য তাঁদের হাওড়া জেলা আদালত বা আলিপুর আদালতে ছুটতে হচ্ছে। ‘বেল-বন্ড পাওয়ার’ না বাড়ায় তাঁরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উলুবেড়িয়া আদালতে সিভিল বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পঞ্চানন বিশ্বাস বলেন, “আমাদের দাবি দু’টি দীর্ঘদিনের। আমরা অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি চালাব। সুরাহা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
এ দিন বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের আত্মীয়েরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের দাবি, এ ভাবে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। সময়ও নষ্ট হল। অবিলম্বে সমস্যা দূর করার দাবি তোলেন তাঁরা। উলুবেড়িয়ায় একটি ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলার এ দিন শুনানি ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় হতাশ হয়ে তার দাদা বলেন, “এ দিন ভাইয়ের জামিন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুনানিই তো হল না! ফের কবে শুনানি হবে সেটাও জানতে পারলাম না। দুশ্চিন্তা বাড়ল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy