Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫

মেরে, মাথা ঠুকে মাকে খুন, ধৃত

বুধবার রাতে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকার খলিসানি রথতলার ঘটনা। নিহতের নাম মালতি মণ্ডল (৫৭)।

ধৃত রাকেশ মণ্ডলকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সুব্রত জানা

ধৃত রাকেশ মণ্ডলকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সুব্রত জানা

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

মদ্যপ অবস্থায় বেধড়ক মারধর করে, দেওয়ালে মাথা ঠুকে এক প্রৌঢ়াকে খুনের অভিযোগে তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রৌঢ়ার ‘অপরাধ’, তিনি ছেলের ঋণে কেনা মোটরবাইকের দু’মাসের কিস্তির টাকা দিতে আপত্তি করেছিলেন।

বুধবার রাতে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকার খলিসানি রথতলার ঘটনা। নিহতের নাম মালতি মণ্ডল (৫৭)। ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁর ছেলে, বছর ছাব্বিশের রাকেশকে। পুলিশের দাবি, ধৃত অপরাধের কথা কবুল করেছে। ধৃতকে বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

মালতিদেবীর স্বামী অসিতবাবু ছেলের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন যাবৎ ছেলে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে মাকে মারধর করত। ওকে বাইক কিনতে বারণ করেছিলাম। সারাদিন মদ খেয়ে পড়ে থাকত। কাজে যেত না। বারবার মায়ের কাছে কিস্তি মেটানোর জন্য টাকা চাইত। টাকা দিতে না-পারলে মারধর করত। কিন্তু ও যে এ ভাবে মাকে মেরে ফেলবে ভাবতে পারিনি।’’ বৃহস্পতিবার আদালতে যাওয়ার পথে রাকেশ বলে, ‘‘শুক্রবার দু’মাসের কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা। না-দিতে পারলে ওই সংস্থা বাইক নিয়ে চলে যাবে বলেছে। তাই টাকা চেয়েছিলাম। মা রাজি না-হওয়ায় মাথায় রাগ চড়ে যায়।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাকেশ চেঙ্গাইলের একটি জুটমিলে অস্থায়ী শ্রমিকের কাজ করে। অসিতবাবুও ওই মিলের অস্থায়ী শ্রমিক। মাসচারেক আগে ১৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে একটি বেসরকারি ঋণদানকারী সংস্থার থেকে ঋণে মোটরবাইক কেনে রাকেশ। কিস্তি বাবদ প্রতি মাসে রাকেশের ৩২০০ টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু মাসদুয়েক ধরে সে মিলে যাচ্ছিল না। ফলে, মজুরি না-পাওয়ায় বাইকের জুন-জুলাইয়ের কিস্তির টাকাও মেটাতে পারেনি। বুধবার রাতে অসিতবাবু কাজে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে রাকেশ মায়ের কাছে টাকা চায়। মালতিদেবী আপত্তি জানানোয় শুরু হয় বচসা। তারপরেই রাকেশ মাকে মারধর শুরু করে এবং দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেয় বলে অভিযোগ। মালতিদেবীর চিৎকারে তাঁর দেওর লক্ষ্মীকান্তবাবু চলে আসেন। তিনি পাশেই থাকেন। গোলমাল থামাতে গেলে রাকেশ তাঁকেও মারধর করে বলে অভিযোগ। লক্ষ্মীকান্তবাবুর মাথা ফেটে যায়। ততক্ষণে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন মালতিদেবী। পড়শিরা তাঁকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।

মালতিদেবীর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই প্রতিবেশীরা রাকেশকে আটকে রাখেন। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। লক্ষ্মীকান্তবাবুই পুলিশের কাছে রাকেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সকালে অসিতবাবু বাড়ি ফিরে ঘটনার কথা জানতে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy