প্রতিবাদ: চুঁচুড়া পুরসভার সামনে স্থায়ী চাকরির দাবিতে মঙ্গলবার অস্থায়ী কর্মীদের ফের বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ
নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় ডামাডোল অব্যাহত। এর মধ্যেই চার অস্থায়ী পুরকর্মীকে মঙ্গলবার বদলি করে দেওয়া হয়। তাতে গোটা বিষয়টিতে আগুনে ঘি পড়েছে। অভিযোগ, নিয়োগে অসচ্ছতার প্রতিবাদ করাতেই পুর-কর্তৃপক্ষ ওই ব্যবস্থা নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে এবং স্থায়ীকরণের দাবিতে অস্থায়ী কর্মীরা এ দিন পুরসভার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
পুরসভা সূত্রের খবর, পুরভবনে কর্মরত ওই চার কর্মীর মধ্যে সুমন দত্ত নামে এক জনকে শহরের কেওটা এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরোয়ান করে পাঠানো হয়েছে। তিন জনকে অন্য দফতরে পাঠানো হয়েছে। সকালে ওই খবর চাউর হতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। এক বিক্ষোভকারীর অভিযোগ, ‘‘ওঁরা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বিক্ষোভে সামনের সারিতে ছিলেন। তাই প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হল।’’ তাঁদের ক্ষোভ, দীর্ঘ কুড়ি বছর কাজ করেও পুরসভার সাফাই বিভাগের অনেকে স্থায়ী হননি। পুর-প্রশাসককে এর জবাবদিহি করতে হবে বলে দাবি ওঠে। সাফাই বিভাগের অস্থায়ী কর্মী মনোজ দাস বলেন, ‘‘দশ বছর কাজ করছি। করোনার সময়েও ঝুঁকি নিয়েও কাজ করছি। কিন্তু আমাকে পুরপ্রধানের চোখে পড়ছে না। পার্টির ছেলেদের আগে নেওয়া হচ্ছে।’’
বিক্ষোভের জেরে গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুর-প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় এ দিনও পুরসভামুখী হননি। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘অস্থায়ীদের স্থায়ীপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অনুমোদন লাগে। আমরা অনেকেরই নাম পাঠিয়েছি। ওঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।’’ বদলি প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিহিংসা কেন হতে যাবে! রুটিন বদলি।’’
ওই পুরসভায় ‘গ্রুপ-সি’ এবং ‘গ্রুপ-ডি’ পদে অন্তত ৫৪ জনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ওই ৫৪ জনের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি তৃণমূলের নেতা-কর্মী বা তাঁদের আত্মীয়। তালিকায় রয়েছেন এক বিদায়ী কাউন্সিলরও। গোটা বিষয়টি সামনে আসতে শোরগোল পড়ে পুরসভা এবং তৃণমূলের অন্দরে। সোমবার শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরেই ফিরহাদ ওই নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেন। তিনি জানান, নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, দলেরই কেউ কেউ বিষয়টিকে কার্যত মান্যতা দিয়ে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। তাতে পুরসভা এবং বিধানসভা ভোটের আবহে দল হেয় হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব কেন হস্তক্ষেপ করলেন না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে শাসনে এই রাজ্যে কিন্তু একজন সাংসদ প্রশ্ন তোলায় পুরমন্ত্রী পুরসভার নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করে দিলেন।’’ দিলীপের বক্তব্য, ‘‘বিরোধীদের চাপে নয়, আমাদের দলীয় সাংসদ প্রশ্ন তোলায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে। এতে আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে। স্বচ্ছতায় প্রশ্নে দল আপস করবে না। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলছি। সাংগঠনিক স্তরে পদক্ষেপ করতে হলে দল নির্দেশিত পথেই করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy