লন্ডভন্ড: দুই দলের সংঘর্ষের জেরে ভাঙচুর চলে এই ক্লাবে। বৃহস্পতিবার রাতে, হাওড়ার লিলুয়ায়। নিজস্ব চিত্র
দু’জন রাজমিস্ত্রিকে মারধরের ঘটনা শেষ পর্যন্ত গড়াল তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে। ভাঙচুর করা হল অন্তত ১২টি বাড়ি ও ১০টি মোটরবাইক। তছনছ করা হল একটি ক্লাবঘর। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে পড়ল ইট। মাথা ফাটল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের।
যদিও উভয় পক্ষই এই ঘটনায় তাদের সমর্থকদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ জনকে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মারামারির ওই ঘটনা ঘটে লিলুয়া থানা এলাকার জগদীশপুরে। ঘটনার সূত্রপাত ওই দিন সন্ধ্যায়, দেবীর পাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। অভিযোগ, টোটোন দলুই, জয় দাস এবং চিরণ কাহার নামে তিন যুবক দু’টি মোটরবাইকে দেবীর পাড়ার দিকে আসার সময়ে দু’জন রাজমিস্ত্রিকে ধাক্কা মারেন। ওই ঘটনা ঘিরে দু’পক্ষে বচসা বেধে যায়। অভিযোগ, আচমকাই টোটোন ও তাঁর দুই সঙ্গী রাজমিস্ত্রিদের মারধর করতে শুরু করেন।
টোটোন স্থানীয় একটি ক্লাবের সম্পাদক এবং এলাকায় বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দু’জন মিস্ত্রিকে মারধর করছেন খবর পেয়ে ছুটে আসেন এলাকার তৃণমূল সমর্থকেরা। অভিযোগ, তাঁরা পাল্টা টোটোন ও
তাঁর দুই সঙ্গীকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। যদিও পরে পুলিশ চিরণকে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, তাঁরা লিলুয়া থানায় গিয়ে ঘটনাটি আপসে মিটিয়ে দিতে অনুরোধ করলেও পুলিশ তা করেনি। এরই প্রতিবাদে পাড়ায় ফিরে বেনারস রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় টায়ার। রাত ৯টা থেকে ওই অবরোধ চলায় গোটা এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। দেখা দেয় তীব্র যানজট। অবরোধ হটাতে বিশাল বাহিনী নিয়ে ছুটে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। কিন্তু অবরোধ ওঠা তো দূর, উল্টে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হন চার পুলিশকর্মী-সহ এক সিভিক ভলান্টিয়ার।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে তাঁদের গোলমাল চলাকালীন কয়েকশো সমর্থককে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন জগদীশপুরের তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ হাজরা। টোটোন যে ক্লাবের সদস্য, সেই ক্লাবঘর ভেঙে তছনছ করেন তাঁরা। ভাঙচুর চালানো হয় ১২টি বাড়িতে। এক বাসিন্দা শঙ্করী দলুই বলেন, ‘‘পুলিশের সামনেই গোবিন্দ হাজরার লোকজন লাঠি, রড নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালায়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালানো হয়। গোলমাল থামাতে তখন পুলিশ আসেনি।’’
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়ার বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ এতে জড়িত নয়। তবে ওই এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান যে কাণ্ড করছেন, তার প্রতিবাদে আমরা এ বার পথে নামব।’’ অন্য দিকে গোবিন্দবাবু ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেও বলেন, ‘‘বিজেপির দুষ্কৃতীদের শায়েস্তা করতে বাসিন্দারাই প্রতিবাদ করেছেন। তৃণমূল কোনও কিছুর মধ্যে ছিল না।’’
হাওড়ার এসিপি (উত্তর) প্রতীক্ষা ঝরখারিয়া বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy