Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

টাকা জমা পড়েনি, অকেজো পড়ে কোটি টাকার নলকূপ

কেন এখনও চালু করা গেল না নলকূপগুলি?

পড়ে রয়েছে এমনই তিনটি গভীর নলকূপ। নিজস্ব চিত্র

পড়ে রয়েছে এমনই তিনটি গভীর নলকূপ। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৫
Share: Save:

এলাকার জলকষ্ট মেটাতে ৬ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল তিনটি গভীর নলকূপ। কিন্তু সেই নলকূপ চলবে যে বিদ্যুতে, তার সংযোগের টাকা এক দফতর থেকে অন্য দফতরে জমা পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, নলকূপের পাইপ নিয়ে যাওয়ার জন্য খোঁড়া হয়েছিল রাস্তা। কাজ হয়ে যাওয়ার পরে সেই রাস্তা মেরামতির টাকাও সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেওয়া হয়নি। ফলে দেড় বছর কেটে গেলেও অকেজো হয়ে রয়েছে তিনটি গভীর নলকূপ। অন্য দিকে, গোটা এলাকা জুড়ে মাথা তুলেছে একের পর এক বহুতল। ফলে গত পাঁচ বছরে লোকসংখ্যা মারাত্মক হারে বাড়ার পাশাপাশি তীব্র আকার নিয়েছে জলসঙ্কট। সেই সঙ্গে বেড়েছে আবর্জনার পরিমাণ। অভিযোগ, আবর্জনা সাফাইয়ের ব্যাপারে পঞ্চায়েতের উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। সংস্কার করা হয়নি মান্ধাতা আমলের নিকাশি ব্যবস্থারও। ফলে বৃষ্টি হলেই গোটা এলাকা কার্যত নরক হয়ে উঠছে। আবর্জনা ভেসে বেড়াচ্ছে রাস্তা জুড়ে।

ঠিক এমনই অবস্থা হাওড়া শহর লাগোয়া আন্দুল রোডের দু’পাশে থানামাকুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। ওই পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে বিবেকানন্দ পার্ক, চুনাভাটি, নতুন পল্লি, পোদরা ইত্যাদি এলাকা। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জল সরবরাহের একমাত্র ভরসা বাম আমলে তৈরি হওয়া হালদারপাড়ার একটি গভীর নলকূপ এবং একটি ওভারহেড জলাধার। সেখান থেকে জল সরবরাহ করা হলেও প্রয়োজন অনুযায়ী তা বাড়ি বাড়ি পৌঁছয় না। সমস্যা মেটাতে দেড় বছর আগে কেএমডিএ-র টাকায় তৈরি করা হয় তিনটি গভীর নলকূপ।

কেন এখনও চালু করা গেল না নলকূপগুলি?

গভীর নলকূপের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা মেট্রোপলিটন ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন অথরিটি (কেএমডব্লিউএসএ)-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল বসাক বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ পর্ষদকে টাকা না দেওয়ায় দু’টি গভীর নলকূপ চালু করা যায়নি। আর একটি সম্পূর্ণ হয়ে রয়েছে। কিন্তু আন্দুল রোড খুঁড়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার পরে রাস্তা মেরামতির খরচ পূর্ত দফতরকে দেওয়া হয়নি। ফলে ওই নলকূপটিও চালু করা যাচ্ছে না।’’

স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ বসাক বলেন, ‘‘চাহিদা মেটাতে কিছু ব্যবসায়ী বেআইনি ভাবে মোটর বসিয়ে মাটির নীচ থেকে জল তুলে প্রতি বোতল ২০-৩০ টাকা করে বিক্রি করছেন। বাধ্য হয়ে সেই জলই আমাদের কিনে খেতে হচ্ছে।’’

এলাকাবাসীদের বড় অংশের আরও অভিযোগ, নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ওই অঞ্চলে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক বহুতল। বেড়েছে লোকসংখ্যা। অথচ, নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করা বা নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার— কিছুই করে না স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত। যার জেরে এলাকায় বাড়ছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ।

এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধান মঞ্জু সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, তিনি বেড়াতে গিয়েছেন। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে বিডিও সন্দীপ শর্মা বলেন, ‘‘গোটা ব্যাপারটা খোঁজ নিয়ে দেখব। কথা বলব পঞ্চায়েতের সঙ্গে। আবর্জনা সাফাইয়ের ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সচেতনতামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি সব আবর্জনা এক জায়গায় জমা করে কী ভাবে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা যায়, সেই পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Andul Water Crisis Deep Tubewell
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy