Advertisement
E-Paper

প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত নন, টাকা ফেরালেন প্রৌঢ়

দিন কয়েক আগে ব্লক অফিসে গিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আসেন দোতলা পাকা বাড়ির মালিক রবীন।

চণ্ডীতলা-১ ব্লক অফিসে রবীন কোলে। ছবি: দীপঙ্কর দে

চণ্ডীতলা-১ ব্লক অফিসে রবীন কোলে। ছবি: দীপঙ্কর দে

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৩:২১
Share
Save

আমপানে ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকায় ভুয়ো নাম থাকা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য-রাজনীতি। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরাই যাতে সরকারি ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। চাপে পড়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের নানা প্রান্তে টাকা ফেরাতে শুরু করেছেন ‘ভুয়ো’ ক্ষতিগ্রস্তেরা। সেই তালিকায় এ বার নাম তুললেন চণ্ডীতলা-১ ব্লকের গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতের মণিরামপুর গ্রামের প্রৌঢ় রবীন কোলেও।

দিন কয়েক আগে ব্লক অফিসে গিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আসেন দোতলা পাকা বাড়ির মালিক রবীন। তিনি স্বীকার করেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে তিনি প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেন?

রবীনের দাবি, ‘‘ভুল করে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার একটি টালির ঘর রয়েছে। ঝড়ে সেই ঘরের কিছু টালি ভেঙেছিল। তাই ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছিলাম। পরে মনে হয়েছে, আমার ক্ষতির মাত্রা বেশি নয়। যাঁদের বেশি ক্ষতি হয়েছে, তাঁদেরই টাকাটা পাওয়া উচিত।’’

এর আগে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে শাসকদলের নেতাদের কাটমানি খাওয়া নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠতে থাকায় মুখ্যমন্ত্রী ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করেন। সরাসরি অভিযোগ পৌঁছনো শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। যার জেরে বহু সমস্যার সমাধান হয়েছে। বহু নেতাকে টাকা ফিরিয়ে দিতেও দেখা গিয়েছে। অনেকটা সেই ঢঙেই এ বারও আমপান-ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরানোও শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

রবীন টাকা ফেরালেও গ্রামবাসীরা অবশ্য প্রশ্ন তোলা থামাননি। কোনও সমীক্ষা ছাড়াই প্রশাসন কী করে তাঁর নামে ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতে ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির দুই তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষের নিকটাত্মীয়দের নামও রয়েছে ক্ষতিপূরণ-প্রাপকের তালিকায়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকা নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে আমরা নিশ্চিত ব্যবস্থা নেব। তবে এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার সুযোগ আছে। কেউ তালিকা থেকে বাদ পড়লে তাঁরা পঞ্চায়েতে বা ব্লক অফিসে আবেদন করতে পারেন।’’

বিরোধীরা মনে করছে, দেরিতে হুঁশ ফিরেছে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনের। ভুয়ো তালিকা নিয়ে তদন্তেরও দাবি তুলেছেন। বিজেপি-র শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, ‘‘ভুল তথ্য দিয়ে সরকারি টাকা যাঁরা আত্মসাৎ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘মণিরামপুরের ওই প্রৌঢ় কী ভাবে সরকারি টাকা পেলেন? সেই তদন্তও হওয়া জরুরি।’’

জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূলের সুবীর মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘সরকার ও আমাদের দল এই বিষয়ে কঠোর মনোভাব নিয়েছে। তাই টাকা ফেরত দিচ্ছেন অনেকে। শুভবুদ্ধির উদয় হোক। জনপ্রতিনিধিদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।’’

Cyclone Amphan Cyclone

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}