Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anandadhara project

‘আনন্দধারা’য় স্বনির্ভরতার দিশা পাচ্ছেন প্রতিবন্ধীরাও

প্রতিবন্ধীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২৩
Share: Save:

ওঁরা কাজে বিভোর।

উপার্জন করছেন। স্বনির্ভর হচ্ছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনও বাধা হচ্ছে না।

আমতা-২ ব্লকের উত্তর ভাটোরা গ্রামের রশিদা বেগমের কথাই ধারা যাক। তিনি আংশিক দৃষ্টিহীন। পশুপালনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারপরে ছাগলছানা কিনে ব্যবসা করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কিছুটা হলেও পয়সার মুখ দেখতে পাচ্ছি। সংসারে সুরাহা হচ্ছে।’’

একই সুর শোনা যাচ্ছে ওই ব্লকের প্রতিবন্ধী পূর্ণিমা বেরা, ডলি সামুই বা রশিদা বিবির মুখেও। কেউ টিপ তৈরি করছেন, কেউ বাঁশের চুবড়ি। কারও কোনও হা-হুতাশ নেই।

প্রতিবন্ধীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বছর দুয়েক আগে হাওড়ায় ‘পাইলট’ প্রকল্প হিসাবে আমতা-২ নম্বর ব্লকে এটি চালু হয়। প্রকল্পের সাফল্য দেখে আমতা-১, শ্যামপুর-১ ও ২ ব্লকেও এটি চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পর্যায়ক্রমে জেলার সব ব্লকে এই প্রকল্প চালু করা হবে। আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘এমনিতেই মানবিক প্রকল্পে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা পান। তার উপরে যাঁদের পক্ষে সম্ভব, তাঁরা যদি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা করেন, তা হলে তাঁদের জীবন ধারণের মান অনেকটাই উন্নত হবে। আনন্দধারা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়ে অনেকে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। আমরা পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে নিয়মিত বিষয়টি তত্ত্বাবধান করি।’’

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয় ‘পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ জীবিকা মিশন’ প্রকল্প বা ‘আনন্দধারা’-র মাধ্যমে। এই প্রকল্পে গ্রামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি তৈরি করে তাদের ব্যবসা করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবসা করার ঋণ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার মহিলা ও পুরুষ স্বনির্ভর হয়েছেন। আমতা-২ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, গোষ্ঠীগুলির সঙ্গেই প্রতিবন্ধীদেরও যুক্ত করা হয়েছে। এখানে মোট ৮৩৭ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন আছেন। তাঁদের মধ্যে শংসাপত্র আছে ৭৫০ জনের। তাঁদের পরিবারকে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এক-একটি পরিবারে এক বা একাধিক প্রতিবন্ধী আছেন। এই রকম ৬০৩টি পরিবার আছে। এক-একটি পরিবারকে এক-একটি গোষ্ঠীর সদস্য করে নেওয়া হয়েছে। গোষ্ঠীর অন্য সদস্যদের সঙ্গে প্রতিবন্ধীরাও ব্যবসার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মোট ১২০ জন প্রতিবন্ধী মহিলা ও পুরুষ প্রশিক্ষণ শেষে ঋণ নিয়ে ব্যবসাও করছেন। জামাকাপড় তৈরি, পশুপালন-সহ নানা ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁরা।

উত্তর ভাটোরার রশিদা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে পশুপালনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারপরে গোষ্ঠীর মাধ্যমেই ঋণ নিয়ে ছাগলছানা কিনে ব্যবসা করছেন। সুকান্তবাবু জানান, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকেও বিনামূল্যে ছাগলছানা দেওয়া হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Anandadhara project Specially abled people
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy