ফাইল চিত্র।
পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি শব্দবাজি রুখতে এ বার ‘নাগরিক নজরদারি’ চলবে হাওড়ায়। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে চালানো হবে সেই নজরদারি। খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। সংস্থার সদস্যেরা ‘সাউন্ড লিমিটার’ যন্ত্র নিয়ে টহলদারিতেও নামছেন।
২০১১ সাল থেকে কলকাতায় যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই নজরদারি চালাচ্ছে, তারাই গ্রামীণ হাওড়া এবং শহরাঞ্চলেও এ বারই প্রথম পথে নামছে। সঙ্গে নিয়েছে জেলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকেও। কলকাতার সংস্থাটির পক্ষে পরিবেশকর্মী নব দত্ত জানান, অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে শব্দবাজির বিরুদ্ধে কাগজে-কলমে অনেক ব্যবস্থার কথা বলা হলেও বাস্তবে কিছুই হয় না। শব্দবাজির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে তবেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই নাম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে থানায় অভিযোগ জানান না। নববাবু বলেন, ‘‘আমাদের কন্ট্রোল-রুমে নাগরিকদের ফোন করতে বলি। তাঁদের হয়ে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করি। এতে সাফল্য এসেছে। তাই জেলা স্তরেও এই ব্যবস্থা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছি।’’
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রের খবর, আজ, শনিবার থেকে হাওড়া শহরে একটি এবং গ্রামীণ এলাকার মধ্যে আমতা বা পানিয়াড়ায় কন্ট্রোল-রুম খোলা হবে। তার ফোন নম্বর সোশ্যাল-মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই প্রচার করা হয়েছে। নাগরিকদের বলা হয়েছে, শব্দবাজির প্রকোপ দেখলে তাঁরা যেন কন্ট্রোল-রুমে ফোন করেন। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না-নিলে বিষয়টি জানানো হবে জেলা পুলিশের কর্তাদের এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে। কালীপুজোর রাতে টগলদারির জন্য ১২ জনের দল গঠন করা হয়েছে। কোথাও শব্দবাজির দৌরাত্ম্যের অভিযোগ পেলে ওই দলের সদস্যেরা সেখানে সরাসরি চলে যাবেন। ‘সাউন্ড লিমিটার’ শব্দের মাত্রা মাপা হবে। যদি শব্দ মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তা হলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির পক্ষে পরিবেশকর্মী শুভ্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘গত বছর এখানে কালীপুজোর সময়ে শব্দ দূষণের মাত্রা অনেক বেশি ছিল। এ বারে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয় সেটাই আমরা দেখব।’’ যা খরচ হচ্ছে, তা তাঁদের সংস্থার সদস্যেরা চাঁদা তুলে জোগাড় করেছেন বলে শুভ্রদীপবাবু জানান। তাঁরা নিজেরাই দু’টি ‘সাউন্ড লিমিটার’ কিনেছেন।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে পুলিশ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। চাইলে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে আরও ‘সাউন্ড লিমিটার’ দেওয়া হবে বলে পর্ষদের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শব্দবাজির অভিযোগ নিয়ে অনেকে ভয়ে থানায় যান না, এটা ঠিকই। নাগরিক নজরদারির মাধ্যমে সেই খামতি দূর হতে পারে। পুলিশের কাছে কোনও সাউন্ড লিমিটার নেই। পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি থানায় একটি করে সাউন্ড লিমিটার দেওয়ার কথা থাকলেও হাওড়ায় আসেনি।’’
জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘সাউন্ড লিমিটার কবে মিলবে সে বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশিকা পাইনি। সাউন্ড লিমিটার ছাড়াও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের কোনও অসুবিধা হয় না। তবে ওই যন্ত্র হাতে পেলে কিছুটা সুবিধা তো হবে।’’ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক কর্তা জানান, ওয়েবেলকে ওই যন্ত্রের বরাত দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেলেই প্রতিটি থানাকে ‘সাউন্ড লিমিটার’ দিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy