আলোছায়া: বন্ধ দরজা খুলে আলো ছড়ানোর প্রতীক্ষায় শ্রমিক মহল্লা। —নিজস্ব চিত্র
তিন মাস পার। শ্রমিকদের লাগাতার আন্দোলন, শ্রম দফতরে একাধিক বৈঠকেও রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলের দরজা খোলেনি। উৎপাদন চালু করতে এ বার মধ্যস্থতাকারীর ভুমিকা নিলেন পুর-কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক সংগঠন এবং মালিকপক্ষকে নিয়ে তাঁরা একপ্রস্থ আলোচনা সেরেছেন।
রিষড়ার পুর-প্রশাসক বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘লকডাউনের জন্য শ্রমিকেরা দুর্দশায় পড়েন। মিল বন্ধ থাকায় শ্রমিক মহল্লার উপরে নির্ভরশীল মুদি দোকান, সেলুন, ওষুধের দোকান-সহ অনেক কিছুতেই এর প্রভাব পড়েছে। সেই কারণেই বিষয়টিতে আমরা এগিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই মিল খুলবে।’’
লকডাউনের শুরুতেই সরকারি নির্দেশিকা মেনে ওয়েলিংটন জুটমিল বন্ধ হয়। কিছু দিন আগে সরকার মিল খোলার ছাড়পত্র দিলেও ওয়েলিংটন চালু হয়নি। মালিকপক্ষের বক্তব্য ছিল, কিছু বিষয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে উৎপাদন চালু করা হবে। শ্রমিক-নেতারা অবশ্য আগে উৎপাদন, পরে আলোচনার দাবি তোলেন। শ্রম আধিকারিকরাও উৎপাদন চালু রেখে আলোচনার পক্ষে মত দেন।
মিল সূত্রের খবর, গত সোমবার কলকাতায় শ্রম দফতরে বৈঠকের কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়। মঙ্গলবার, রথযাত্রার দিন পুর-প্রশাসক বিজয়বাবুর উপস্থিতিতে এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি এবং সিটু প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং কারখানার আধিকারিকেরা বৈঠকে বসেন। শীঘ্রই রক্ষণাবেক্ষণ এবং আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত শেড মেরামত নিয়ে আলোচনা হয়। দিন পনেরো ওই কাজের পরে উৎপাদন শুরু এবং একটি কমিটি করে মিলের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা নিয়েও কথা হয়।
পুরসভা সূত্রের দাবি, দু’পক্ষই বৈঠকের সিদ্ধান্তে সহমত। সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য শ্রম দফতরে পাঠানো হচ্ছে।
শ্রমিক নেতাদের একাংশ জানান, কারখানা সংক্রান্ত বিষয়ে শ্রম দফতরে আলোচনাই দস্তুর। ওয়েলিংটন নিয়ে শ্রম দফতরে আলোচনা জারি রয়েছে। শ্রমিক স্বার্থেই পুর-কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতা মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে তাঁরা চান, শ্রম দফতরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হোক। এআইটিইউসি-র হুগলি জেলা সম্পাদক প্রাণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘শ্রমিকদের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। মিল খুলুক, সবাই চাই।’’ মিলের আইএনটিইউসি নেতা পঞ্চা যাদব বলেন, ‘‘বৈঠকে সমস্যা কার্যত মিটে গিয়েছে। বাকি প্রক্রিয়া নিশ্চয়ই শ্রম দফতরে চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’
দু’বছর ধরে বন্ধ চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল খুলতে উদ্যোগী হয়েছে মালিপপক্ষ। এই বিষয়ে মিলের ১১টি শ্রমিক সংগঠনকে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে তারা। শ্রম দফতরের আধিকারিকদের মধ্যস্থতার আর্জি জানিয়েছেন শ্রমিক সংগঠনগুলি। শ্রম-আধিকারিকরা জানান, গোন্দলপাড়া জুটমিল খুলতে ওই দফতর প্রথম থেকেই মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রেও মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এক শ্রমকর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক কথাবার্তা বলে বৈঠকের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হয়। করোনা পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কী ভাবে বৈঠক করা হবে, সেই প্রশ্নও রয়েছে। সবই দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy