Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Library

পরিত্যক্ত গ্রন্থাগারে ফের নিয়োগ অবসরপ্রাপ্তের

স্থানীয় সূত্রের খবর, এই পাঠাগারটি গ্রন্থাগারিকের অভাবে পাঁচ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখানে কোনও বইপত্র নেই, আলমারি চেয়ার, টেবিল ভেঙে গিয়েছে।

— প্রতীকী ছবি

— প্রতীকী ছবি

নুরুল আবসার
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৩৮
Share: Save:

বই নেই, পাঠক নেই, বসার একটা চেয়ার পর্যন্ত নেই। অথচ গ্রন্থাগারিক আছেন। নিয়মিত হাজিরাও দেন তিনি। এমনই হাল হাওড়ার শ্যামপুরের নাউল প্রগতি পাঠাগারে। এই পরিত্যক্ত গ্রন্থাগারেই অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক আশিস সরকারকে ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক হিসাবে পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এই পাঠাগারটি গ্রন্থাগারিকের অভাবে পাঁচ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখানে কোনও বইপত্র নেই, আলমারি চেয়ার, টেবিল ভেঙে গিয়েছে। এই পাঠাগারেই বছরখানেক আগে আশিস সরকারকে পুনর্নিয়োগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি রোজ গ্রন্থাগারে যাই, কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে চলে আসি। বিষয়টি জেলা গ্রন্থাগার দফতরকে জানিয়েছি।’’

জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক বিদ্যুৎ দাস বলেন, ‘‘আমি নতুন এসেছি, ওই গ্রন্থাগার আবার কীভাবে চালু করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি।

হাওড়া জেলায় মোট ১৩৬টি গ্রন্থাগার আছে। কিন্তু কর্মী ও গ্রন্থাগারিকের অভাবে ২৫টি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ১১টি আংশিক সময়ের জন্য খোলা হয়। কোনওটি সপ্তাহে তিন দিন, কোনওটি সপ্তাহে দু’দিন খোলা থাকে। দীর্ঘদিন ধরে পাঠাগারগুলিতে গ্রন্থাগারিক ও কর্মী নিয়োগ না হওয়ার জন্য এই হাল বলে জেলা গ্রন্থাগার দফতর সূত্রের খবর।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিকদের পুনর্নিয়োগ করে বন্ধ গ্রন্থাগারগুলি খোলার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা হিসাবেই জেলায় মোট ১২ জনকে পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও মাত্র চার জন আগ্রহী হন। ওই চারজনের মধ্যেই আছেন আশিসবাবু।

নাউল প্রগতি পাঠাগার তৈরি হয় ১৯৭৮ সালে। ২০০২ সালে ভবনের সংস্কারও করা হয়। দ্বিতল এই গ্রন্থাগারে বর্তমান হাল শোচনীয়। একতলায় কয়েকটি ভাঙা আলমারি আর ভাঙা চেয়ারটেবিল পড়ে আছে। দোতলার রিডিং রুমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রশিক্ষণ হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আতিয়ার খান বলেন, ‘‘এক সময়ে আমরা এখানে বই পড়তে আসতাম। গ্রন্থাগারিকের অভাবে এটি বন্ধ হয়ে যায়। ফের যে এখানে একজনকে নিয়োগ করা হয়েছে তা জানিই না। তা হলে আমরা গ্রন্থাগার চালু করার জন্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে উদ্যোগী হতাম। আশিসবাবুর অবশ্য দাবি, তিনি পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে বইগুলি কোথায় গেল তা তিনি জানেন না।

পশ্চিমবঙ্গ সাধারণের গ্রন্থাগার কর্মী সমিতির রাজ্য সম্পাদক শিবপ্রসাদ চৌধুরির বক্তব্য, অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিকদের পুনর্নিয়োগ করে যেখানে বন্ধ গ্রন্থাগার খোলার পরিকল্পনা হচ্ছে, নাউল প্রগতি পাঠাগারের অবস্থা দেখিয়ে দিচ্ছে এটা প্রহসন। গ্রন্থাগারের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের কাছে প্রকৃত তথ্যই নেই। গ্রন্থাগারগুলি ঢেলে সাজিয়ে শূন্যপদে নতুন ছেলেমেয়েদের নিয়োগ করা দরকার। না গ্রন্থাগারের সমস্যা মিটবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Library Librarian Shyampur Recruitment Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy