দূষিত: বাগনান বিডিও অফিসের সামনে জমে জঞ্জাল।—ছবি: সুব্রত জানা
যেখানে-সেখানে মাথা তুলছে বহুতল। রাস্তায় যত্রতত্র জমছে জঞ্জাল। নেই সুষ্ঠু জলনিকাশি ব্যবস্থা।
এলাকার এই সব সমস্যা দূর করতে প্রায় সাত বছর আগে বাগনানকে পুরসভায় পরিণত করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ প্রস্তুতিতেই কার্যত থমকে গিয়েছে। নাগরিক সমস্যা দূর করতে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন, তা তাঁদের কাছে নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত কর্তারা। ফলে, হাওড়ার এ তল্লাটে নগরায়ণের জোয়ার এলেও সমস্যা কবে দূর হবে, তার উত্তর নেই। ফলে, ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বাগনানকে পুরসভা হিসাবে ঘোষণা করার ফাইলে রাজ্যপালের সই হয়ে গিয়েছে সেই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই। কিন্তু তারপরে এ বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে আর কিছু বলা হয়নি। ফলে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও অন্ধকারে আছেন বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক তুষার সিংলা বলেন, ‘‘বাগনানকে পুরসভায় পরিণত করার বিষয়ে কোনও সরকারি নির্দেশ এখনও আসেনি।’’ পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রেও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের মাঝামাঝি বাগনান-১ ও ২ এবং খালোড়— এই তিন পঞ্চায়েত নিয়ে বাগনান পুরসভা গঠনের প্রস্তাব হয়। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে এই তিনটি পঞ্চায়েতের জনসংখ্যা, রাস্তাঘাট, মানুষের জীবিকা, শিক্ষা, শিল্প ও বাণিজ্য সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়। তথ্য দেখে সন্তুষ্ট হয়ে পুরসভা গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় ওই দফতর। ২০১৬ সালের গোড়ায় পুরসভা গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব যায় রাজ্যপালের কাছে। তিনি তাতে সম্মতি দিয়ে সই করে দেন। তারপরে সব চুপচাপ!
বর্তমানে বাগনান স্টেশন রোড, মুরালিবাড়, খালোড়, খাদিনান, চন্দ্রপুর-সহ প্রায় সর্বত্রই রাস্তার ধারে জঞ্জালের পাহাড় জমছে। বাসস্ট্যান্ডে সন্তোষ মার্কেটের সামনের নিকাশি খালে ফেলা হচ্ছে বাসস্ট্যান্ডের বর্জ্য। এখানে একাধিক ওষুধের দোকান আছে। আসেন চিকিৎসকরাও। কিন্তু দুর্গন্ধের চোটে নাকে রুমাল দিতে হয় রোগীদের। নিয়মিত নিকাশি নালা সাফ না-করার জন্যই এই অবস্থা বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
খালোড় ছাড়া বাকি দুই পঞ্চায়েতের কোথাও ভ্যাট বা বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। অথচ, প্রতিটি পঞ্চায়েতকে এ জন্য ৩০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। দুই পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, বর্জ্য ফেলার জায়গা করতে হলে পঞ্চায়েতের নিজেদের জমি চাই। কিন্তু এত কম টাকায় জমি কিনে তা করা সম্ভব নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, পুরসভায় পরিণত হলে অন্তত এই খাতে টাকার অভাব হতো না। যত্রতত্র বাড়ি তৈরি এবং তার জেরে নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও ঠেকানো যেত। তা ছাড়া, পুরসভার অধীনে গরিব মানুষেরা বাড়ি তৈরির জন্য সরকারি প্রকল্পে তিন লক্ষেরও বেশি টাকা অনুদান পান। পঞ্চায়েতে এত টাকা আসে না। কর আদায় করে পুরসভা নিজস্ব আয় অনেকটাই বাড়াতে পারে, যা উন্নয়নের কাজে লাগে। পঞ্চায়েতের হাতে কর আদায়ের সেই ক্ষমতা বা পরিকাঠামো নেই।
বাগনান থানা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে প্রসূন রায় বলেন, ‘‘নগরায়ণের দাবি মেনে পুরসভা গঠন করতে হয়। বাগনানকে পুরসভায় পরিণত করার এটাই উপযুক্ত সময়। কিন্তু ঘোষণা আর প্রস্তুতির কথা ছাড়া কিছুই তো দেখছি না।’’ একই বক্তব্য বিভাস সামন্ত, রতনকুমার ঘোষের মতো অনেক নাগরিকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy