Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Potato

কম ফলনে লক্ষ্মীলাভ, আলুর বর্ধিত দামে যুক্তি ব্যাপারীদের

রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় ‘‘আলুর দাম আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। অক্টোবর মাসের শেষ থেকে দাম কমবে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৬:১১
Share: Save:

আলুর দামে বেড়ি পরাতে রাজ্য সরকার সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে কিছু পদক্ষেপ করেছিল। পুলিশকেও বাজারে নামানো হয় নজরদারিতে। কিন্তু তাতেও আলুর দাম তো কমেইনি, বরং আরও বেড়েছে।

বর্তমানে রাজ্যের অন্তত ৪৩২টি হিমঘরে ২২ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। প্রতি মাসে এ রাজ্যের মানুষের খাওয়ার জন্য ৫ লক্ষ টন আলু লাগে। ভিন্ রাজ্যগুলির চাহিদা মেটাতে আরও এক লক্ষ টন আলুর প্রয়োজন হয়। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে আলু থাকবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এবং পড়শি রাজ্যের চাহিদা মেটাতে আরও ১৮ লক্ষ টন আলুর লাগার কথা। হিসেব বলছে, সেই চাহিদা পূরণ করেও আরও ৪ লক্ষ টন আলু মজুত থাকবে। অর্থনীতির নিয়মে চাহিদার সঙ্গে জোগানের সমতা না হলে দাম বাড়ে। কিন্তু মজুত আলুর পরিমাণ থেকে স্পষ্ট, এখনও আলুর দাম বাড়ার তেমন কোনও কারণ নেই।

তা হলে কেন এই পরিস্থিতি?

গত দুই মরশুমে বাড়তি ফলনের কারণে দাম পাননি আলুচাষি বা ব্যবসায়ীরা। এ বার আলু চাষের জমির পরিমাণ কম। তার উপরে বৃষ্টিতে জলদি আলুর চাষও সেই ভাবে হয়নি। সব মিলিয়ে এ বার আলুর উৎপাদন ৮৫ লক্ষ টনের মতো হয়েছে। অন্যবার এই পরিমাণ ৯২ থেকে ৯৮ লক্ষ টন হয়। এ বার উৎপাদন কম। তার পাশাপাশি ভিন্ রাজ্যে আলুর ভাল চাহিদা রয়েছে। মরশুমের শুরু থেকেই ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডে প্রচুর আলু যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ী এবং চাষিরা ভালই দাম পাচ্ছেন।

রাজ্যের দুই প্রধান আলু উৎপাদক জেলা হুগলি ও বর্ধমান-সহ অন্যান্য জায়গায় হিমঘরে জ্যোতি আলুর দাম ১১০০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি)। চন্দ্রমুখী ১২০০ টাকা। বাজারে ক্রেতা এক কেজি জ্যোতি আলু ৩২ টাকা, চন্দ্রমুখী ৩৫ টাকায় কিনেছেন। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, চাষি এ দিন জ্যোতি আলু কেজিতে

২২ এবং চন্দ্রমুখী ২৪ টাকা দাম পেয়েছেন। কয়েক হাত ঘুরে সব খরচ মিলিয়ে আলুর দাম কেজি প্রতি আরও ১০ টাকা বেড়ে যায়। সেই হিসেবে, বাজারে দাম ঠিকই আছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।

ব্যাপারীরা জানান, আলু হিমঘর থেকে বের করে চাষি পাইকারকে দেন। পাইকার ঝাড়াই-বাছাই করে শুকিয়ে ভাল, মাঝারি এবং খারাপ মানের আলু ভাগ করে বস্তায় ভরেন। তার পরে তিনি সেই আলু ডালাওয়ালার কাছে বিক্রি করেন। ডালাওয়ালা ট্রাকে করে আলু বিভিন্ন আড়তে পাঠান। ছোট ব্যবসায়ীরা সেখান থেকেই আলু কিনে নিয়ে যান বাজারে। এই ভাবে চাষির থেকে চার হাত ঘুরে বাজারে পৌছতে আলুর দাম কিলোপ্রতি দশ টাকা বেড়ে যায়। তার উপর এ বার ভাল দাম পাওয়ায় আরও বাড়তি লাভের আশায় ব্যবসায়ীদের একাংশ কিছুটা হলেও আলু চেপে রাখছেন বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা।

রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘সরকার আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। বাজারের নিজস্ব গতিতেই দাম নির্ধারিত হয়। সরকার বেশি ব্যবস্থা নিতে গেলে উল্টো ফল হয়। আলুর দাম আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। অক্টোবর মাসের শেষ থেকে দাম কমবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Potato Price
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy