প্রতীকী ছবি।
প্রস্তুত হুগলি। করোনার টিকাকরণে পরিকাঠামো তৈরির কাজ কার্যত সম্পূর্ণ বলে দাবি জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের। পাশের জেলা হাওড়ার মতোই এখানেও চলতি মাসের শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির গোড়ায় এই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে।’’এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, টিকাকরণ শুরুর দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জানুয়ারির শেষ বা আগামী মাসের শুরুতেই তা হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনের তরফে যেমন নির্দেশ আসবে, সেই অনুযায়ী কাজ হবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী সরকারি হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। টিকা নেওয়া ব্যক্তিকে ওই কেন্দ্রেই পর্ববেক্ষণে রাখা হবে। টিকা দেওয়ার পরে কারও শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্যই ওই ব্যবস্থা। কোন কোন কেন্দ্রে ওই কাজ হবে, সেগুলি ঠিক করার কাজ চলছে। টিকাকরণের গোটা প্রক্রিয়া তদারকির জন্য জেলা স্তরে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। মাথায় আছেন জেলাশাসক। ইতিমধ্যে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকও হয়ে গিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানান, প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধা হিসেবে সাধারণ প্রশাসন, পঞ্চায়েত স্তরের আধিকারিক-কর্মী এবং সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের কর্মীদের প্রাথমিক পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে। টিকাকরণের জন্য পুলিশকর্মীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তৈরি করবেন। তবে দৈনিক কত জনকে টিকা দেওয়া হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পরবর্তী পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।
হুগলিতে করোনার প্রথম সংক্রমণ হয় মার্চ মাসের শেষে। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী শুক্রবার, নতুন বছরের প্রথম দিন পর্যন্ত এই জেলায় মোট সংক্রমিত ছিলেন ২৮ হাজার ৫৬৯ জন। মোট মৃত ৪৫৮ জন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সংক্রমণ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তার পর থেকে অবশ্য সংক্রমণের রেখচিত্র নিম্নগামী। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে পয়লা জানুয়ারি পর্যন্ত এক দিনও সংক্রমণ তিন অঙ্কে পৌঁছয়নি। মৃত্যুর হারও কমেছে বলে পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে। শুক্রবার সংক্রমিত হন ৭৯ জন। ওই দিন কেউ মারা যাননি। মোট অ্যাক্টিভ আক্রান্ত আটশোর নীচে। ডিসেম্বরের ১২ তারিখে তা ছিল সাড়ে বারোশো।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সংক্রমণের হার অনেকটাই কমেছে। সেটা শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। মানুষের কাছে আবেদন, বাইরে বেরোলেই যেন মাস্ক ব্যবহার করেন এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখেন। তাতে ভাইরাস আক্রমণের সম্ভাবনা অনেকাংশে কম থাকে। আর টিকা ঠিকঠাক কাজ করলে করোনা মোকাবিলায় তা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy