এই পোস্টারই পড়েছে এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র
পাড়াময় ফ্লেক্স টাঙানো। উপরের অংশে লেখা ‘ছিঃ ছিঃ ছিঃ’!
তার পরে প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সুপর্ণা মণ্ডলের নামে ধিক্কার। নীচে ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবি!
চন্দননগর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওই ফ্লেক্স ঘিরে শোরগোল পড়েছে। শুক্রবার সকালে এখানকার বিভিন্ন জায়গায় ওই ফ্লেক্স বাসিন্দাদের চোখে পড়ে। প্রচারকের কোনও নাম অবশ্য ফ্লেক্সে নেই। ফলে, কে বা কারা ফ্লেক্স টাঙিয়ে সুপর্ণাদেবীর নামে ওই অভিযোগ তুলে ‘কাটমানি’ ফেরত চাইছেন, তা জানা যায়নি। সুপর্ণাদেবীকে অবশ্য ফ্লেক্সে প্রাক্তন নন, শুধু কাউন্সিলর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুপর্ণাদেবীর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি আমার এবং তৃণমূলের বদনাম করতে মিথ্যা কথা রটাতে ওই ফ্লেক্স ছড়িয়েছে।’’ একই অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশেরও। তাঁরা মনে করছেন, লোকসভা ভোটে এই ওয়ার্ডে বিজেপি ‘লিড’ পেয়েছে। সেই কারণে এখানে তাদের শক্তি অনেক বেড়েছে। আরও বেশি করে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েমের জন্যই বিজেপি ওই কাজ করেছে।
বিজেপি অভিযোগ মানেনি। দলের ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পালের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমরা বেনামে ফ্লেক্স ছড়াতে যাব কেন?’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘পুরসভাগুলিকে তৃণমূল যে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছে, তা ওদের দলনেত্রীর কথাতেই পরিষ্কার। মানুষ তো হিসেব চাইতেই পারেন। তবে শুধু চুনোপুঁটি নয়, অনেক রাঘব-বোয়ালও ওখানে আছে।’’
দিন কয়েক আগেই দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি প্রকল্পে ‘কাটমানি’ খাওয়ার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল দলীয় নেতাদের একাংশ। তারপর থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্তে ‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। শুরু হয়েছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে হামলাও।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে চন্দননগরের পুরবোর্ড অবশ্য রাজ্য সরকার বেশ কয়েক মাস আগে ভেঙে দিয়ে প্রশাসক বসিয়েছে। ফলে, কাগজ-কলমে সুপর্ণাদেবী এখন কাউন্সিলর নন। তাঁর দাবি, ‘‘এই ওয়ার্ডে নিম্নবিত্তদের বাস। সব সময় মানুষকে সাহায্য করি। আর্থিক সুবিধা কোনও দিন নিইনি। আমার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি বা অন্য কোনও অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, ত হলে যে কোনও শাস্তি মাথা পেতে নেব। সে ক্ষেত্রে দল এবং রাজনীতিও ছেড়ে দেব।’’ ২০১৫ সালের পুরভোটে ওই ওয়ার্ড থেকে জিতে সুপর্ণাদেবী প্রথমবার কাউন্সিলর হন। তাঁর স্বামী মাছের ব্যবসা করেন।
এ দিন ওই ওয়ার্ডের গঞ্জের বাজার, জিটি রোডের ধারে, বোরাই চণ্ডীতলায় ওই ফ্লেক্স দেখা গিয়েছে। তা নিয়ে রীতিমতো ফিসফাস চলেছে। কেউ বলছেন, অনিয়ম অনেক জায়গাতেই হয়েছে। কোনও কাউন্সিলর টাকা নিয়ে দোকান বসিয়েছেন। কোনও কাউন্সিলর গরিব মানুষের বাড়ি তৈরির প্রকল্পে টাকা হাতিয়েছেন। কারও কথায়, পুরসভা যাতে স্বচ্ছ ভাবে চলে, প্রশাসনের দেখা উচিত ছিল। তৃণমূলেরই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকেরা ওই ফ্লেক্স লাগানোর কাজে যুক্ত কিনা, চর্চা চলছে তা নিয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy