আটক করা হয়েছে এই ট্রাকটি। —নিজস্ব চিত্র
আর পাঁচটা জরুরি পরিষেবা ট্রাকের সঙ্গে কোনও ফারাকই ছিল না। সামনের বোর্ডে লেখাও ছিল ‘আর্জেন্ট মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট’। পুলিশ গাড়িটি আটকাতে চালক জানিয়েছিল সে কথা। নিশ্চিন্ত হয়ে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার পরেই চোখ কপালে উঠল পুলিশের। কারণ ততক্ষণ গাড়ির পিছনের দরজা ঠিকমতো আটকানো না থাকায় সেখান থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়েছে একটি জলজ্যান্ত গরু। বেগতিক বুঝে ততক্ষণে চম্পট দিয়েছে গাড়ির চালক আর সহযাত্রীরা।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাতে ভদ্রেশ্বরের শ্বেতপুরে। পরে পুলিশ ওই গাড়ি থেকে আরও একটি গরু উদ্ধার করে।
সাধারণত পুলিশ, প্রেস, ওষুধ, দুধ ইত্যাদি পরিষেবার গাড়ির সামনে বোর্ড লাগানো থাকে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের গাড়ি ব্যবহার করে নানা অসামাজিক কাজে সামিল হয় দুষ্কৃতীরা। সোমবার রাতে এরকমই একটি ঢাকা ছোট ট্রাকের সামনের কাচের উপর ‘আর্জেন্ট মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট’ বোর্ড লাগিয়ে গরু পাচার করতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ে ট্রাকটি। এ’দিন রাত ২টো নাগাদ চুঁচুড়ার দিক থেকে আসা কলকাতাগামী একটি ছোট ট্রাক ভদ্রেশ্বরের ব্যাজরার কাছে টহলরত পুলিশের নজরে আসে। গাড়িতে চালক সহ দু’জন যাত্রী ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ গাড়িটি আটকালে চালক এবং সহযাত্রীরা জানায়, গাড়িতে ওষুধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত জিনিসপত্র রয়েছে। এরপর পুলিশ গাড়িটিকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু বিধি বাম! গাড়ির পিছনের দরজা ঠিকমতো আটকানো না থাকায় কিছুদূর যাওয়ার পরই একটি গরু হঠাৎই গাড়ি থেকে লাফিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। ঘটনাটি নজরে আসতেই ট্রাকটির পিছনে ধাওয়া করে পুলিশ। অবস্থা বেগতিক বুঝে চালক এবং সহযাত্রীরা শ্বেতপুরের নোয়াপাড়ার কাছে রাস্তার উপর গাড়ি ফেলে রেখে চম্পট দেয়। পুলিশ গাড়িটিকে আটক করে। ট্রাকের ভিতর তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ পা এবং মুখ বাঁধা আরও একটি গরুর খোঁজ পায়। দু’টি গরুকেই উদ্ধার করেছে পুলিশ। চালক এবং সহযাত্রীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এদিকে গরু উদ্ধারের খবর পেয়েই গ্রামবাসীরা জড়ো হন ভদ্রেশ্বর থানার শ্বেতপুর পুলিশ ফাঁড়িতে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের বাড়িতে গরু রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রায়ই এই এলাকা থেকে গরু বেপাত্তা হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজি করেও কোনও হদিশ মেলে না। তাঁদের ধারণা, রাতের অন্ধকারে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীর সহযোগিতায় বহিরাগতরা গরু চুরি করে এই ধরনের ঢাকা ট্রাকে পাচার করে। গত কয়েক বছর আগে এই ধরনের একটি ঢাকা ট্রাকে জরুরি দুধ সরবরাহের বোর্ড লাগিয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিল কিছু দুষ্কৃতী। ভদ্রেশ্বর এলাকায় পুলিশের জালে তারা ধরা পড়ে এবং গাড়ির চালক সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
শ্বেতপুর এলাকার বাসিন্দা অসীম ঘোষ জানান, ‘‘সন্ধ্যার পর কোনও গরু রাস্তায় চরে বেড়ালে প্রায়ই গরুচোরেরা তাদের তুলে নিয়ে যায়। পুলিশের নজর এবং নানা হয়রানি এড়াতেই এই ধরনের বোর্ড লাগানো ঢাকা গাড়ি ব্যবহার করে।’’
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান,‘‘গাড়ির চালক ও পাচারকারিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। তবে জরুরি পরিষেবার নামে ভুয়ো স্টিকার লাগানো গাড়ির উপর কড়া নজরদারি চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy