দুর্ভোগ: জলমগ্ন ভদ্রকালীর রাস্তা (বাঁ দিকে)। চুঁচুড়া স্টেশনে গলাপোলের বেহাল দশা, ঝুঁকির যাতায়াত (ডান দিকে)।
একটানা না হলেও দু’দিন বৃষ্টির জেরে হুগলি শিল্পাঞ্চলের দুই শহরে দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
নিকাশি ব্যবস্থার হাল খারাপ হওয়ার ফলে একটু বৃষ্টি হতেই জল জমে গিয়েছে উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভদ্রকালীর ভাগাড় মোড় এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিন দু’য়েকের বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি থামলেও সেই জল সরে যাওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। ফলে জল ভেঙেই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এলাকার এক গৃহবধূর কথায়, ‘‘সবে বৃষ্টি শুরু হল, তাতেই এই অবস্থা! কয়েক দিন নাগাড়ে বৃষ্টি হলে কী পরিস্থিতি হবে! বৃষ্টি হলেই আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ছেলেমেয়েদের স্কুলে বেরোতেও সমস্যা হচ্ছে। জমা জল দ্রুত বের করার ব্যবস্থা করা হোক।’’ স্থানীয় বাসিন্দা তথা কলেজ শিক্ষক শৌভিক দাশগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এই সময় ডেঙ্গি-সহ নানা অসুখ হতে পারে। জলবাহিত নানা রোগের আশঙ্কাও থাকে। সেই কারণে অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান করা দরকার। আমরা পুর-কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানিয়েছি।’’ পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘ওখানে জল জমার সমস্যা রয়েছ। কীভাবে এর স্থায়ী সমাধান করা যায়, পরিকল্পনা করে সেই ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
অন্যদিকে, এই দু’দিনের বৃষ্টিতেই হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন শাখার চুঁচুড়া স্টেশনে গলাপোলের নীচে প্রায় হাঁটু সমান জল জমে গিয়েছে। অবস্থা এতটাই খারাপ, হঠাৎ করে দেখলে কাদা গোলা পুকুর বলে ভুল হয়। ফলে নিত্যযাত্রীরা ওই পথ এড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইনের উপর দিয়েই যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
বস্তুত পরিকল্পনাহীন ভাবে তৈরি হওয়ায় চুঁচুড়া স্টেশনের গলাপোলে বছরভর জলকাদা থাকে। তার ওপর দিয়েই অটো, টোটো পার হয়ে যায়। তাই বিষয়টি তেমনভাবে নজরে আসেনি। এইবার বর্ষা দেরিতে আসায় সমস্যাও হয়নি এর আগে।
হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন শাখার চুঁচুড়া আপ স্টেশনে নেমে সোজা হেঁটে গেলেই অটো স্ট্যান্ড। জেলা সদরে ঢোকার জন্য অটো বা টোটোয় চড়ে রেল লাইনের নীচে গলাপোল দিয়ে যেতে হয়। গলাপোলের অংশটা রাস্তার বাকি অংশের চেয়ে অনেকটাই নিচু। ফলে সারাবছরই পাশ্ববর্তী মাছের বাজারের জল সেখানে জমা হয়। সারাবছর জল জমে থাকায় গলাপোলের পিচ সরে গিয়ে কোথাও কোথাও পাথরও বেরিয়ে পড়েছে।
বৃষ্টি হওয়ার ফলে অবস্থা আরওই শোচনীয় হয়ে উঠেছে। নিচু হওয়ার আশপাশের সমস্ত জলই জমা হয়েছে গলাপোলে। এই অবস্থায় গলাপোল দিয়ে অটে বা টোটো পর্যন্ত যেতে পারছে না। মানুষ চলাচল তো দূরের কথা। তার ফলে যাত্রীরা লাইনের উপর হেঁটে এসে গলাপোল পার হয়ে অটো বা টোটো ধরতে বাধ্য হচ্ছেন এখন। এতে যে কোনও সময়ই ট্রেনে বড় কোনও বিপদ ঘটে যেতে পারে।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিস, জেলাশাসক, আদালত চুঁচুড়ায় অবস্থিত হওয়ার প্রতিদিনই বহু মানুষ নানা কাজে জেলা সদরে আসেন। রাস্তায় এই অবস্থার জন্য দুর্ভোগ বেড়েছে তাঁদের।
এই পরিস্থিতির জন্য চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় অবশ্য রেল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই পথ দিয়ে যেতে গিয়ে আমার গাড়ির চাকাও আজ ডুবে গিয়েছিল। রেলের তরফ থেকে পরিদর্শন করা হলেও কোনও কাজ হয়নি। স্থানীয় বিধায়ক এবং রেলযাত্রী সমিতিও সমাধান চেয়ে আবেদন করেছিল। আমরা ফের চিঠি দেব রেলকে।’’ পূর্ব রেলের এক পদস্থ কর্তা অবশ্য ওই পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার কথা বলেছেন।
দুই শহরেই সুরাহার আশ্বাস পাওয়া গেলেও এখন দেখার কাজ আদৌ হয় কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy